টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে জেলায় দ্বিতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। সুরমা, কালনী, কুশিয়ারা, যাদুকাটা নদীসহ সব নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতোমধ্যে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
জেলার ধর্মপাশা থেকে মধ্যনগর উপজেলাগামী একমাত্র পাকা সড়কটি এখনও পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। মধ্যনগর থেকে মহেষখলাগামী দোয়ারাবাজার এবং তাহিরপুর থেকে সুনামগঞ্জগামী পৃথক ৩টি পাকা রাস্তায় যান চলাচল এখনও বন্ধ। জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজার থেকে সুনামগঞ্জগামী রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ থাকায় নৌকা চলাচল শুরু হয়েছে।
সদর উপজেলার ইব্রাহিমপুর থেকে ডলুরাগামী রাস্তাটির সৈয়দপুর পয়েন্টে ডুবে যাওয়ায় উত্তর সুরমা এলাকার সঙ্গে শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। বুধবার সকাল ৯টার দিকে সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার এবং ছাতক পয়েন্টে ৯০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের পশ্চিম ইব্রাহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম আলী বলেন, এবার ১৭ জুন প্রথম দফা বন্যায় বসতঘর ডুবে গেলে বোনের বাড়ীতে আশ্রয় নেই। ৩দিন আগে ঘরে ফিরে এসেছিলাম। কিন্তু গত ১ জুলাই (সোমবার) আবারো বসতঘরে পানি উঠলে ২য় বার বসতভিটে ছেড়ে এসেছি। গত দুই দিনের বৃষ্টিপাতে হাওরসহ সব জায়গায় পানি বেড়েছে। ১৩ দিনের ব্যবধানে আবারও ২য় দফা বন্যায় আমরা ক্ষতিগ্রস্থ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, মঙ্গলবার বৃষ্টিপাত হয়নি বিধায় জেলা সদরের পানি কমতে শুরু করেছে। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় (প্রতিবেশী রাস্ট্রের) মেঘালয়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মানবাধিকার কর্মী আলহাজ্ব এম মুখলেছুর রহমান খান বলেন, ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক শুধু সুনামগঞ্জের জন্য নয়, নেত্রকোনা জেলার জন্যও কাল হয়ে দাড়িয়েছে। সুনামগঞ্জের সুরমা কালনী ও কুশিয়ারা নদীর পানি এখন ভৈরবের দিকে প্রবাহিত হতে না পেরে নেত্রকোনা জেলার ধনু, সোমেশ্বরী ও বৌলাই নদী দিয়ে নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ জেলা প্লাবিত করছে।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আমরা ১ম দফা বন্যা শুরুর পর থেকে যে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো চালু করেছিলাম সেই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো এখনও চালু আছে। ভানবাসীদেরকে আমরা পুরোদমে ত্রাণসেবা দিয়ে যাচ্ছি।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বাসস’কে বলেন, গত ১ জুলাই থেকে আমরা ২য় দফা স্বল্পমেয়াদি বন্যার মুখোমুখি হয়েছি। তবে আগামী ৩দিন চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাত বন্ধ থাকলে বন্যার পানি অতিথি পানির মতই ভাটির দিকে চলে যাবে। সুতরাং ২য় দফার এই বন্যায় আতংকিত হওয়ার কিছুই নেই।