দীর্ঘ ২২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৪০১ ম্যাচে ৯৯১ উইকেট নিয়ে সদ্যই অবসর নিয়েছেন ইংল্যান্ডের সেরা পেসার জেমস এন্ডারসন। তারপরও ক্রিকেট ক্যারিয়ারে নিজের কাছে নিজেকে কখনও সেরা বোলার বলে মনে হয়নি এন্ডারসনের। লর্ডসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট দিয়ে অবসর নেওয়া এন্ডারসন জানান, শুনতে অদ্ভুত লাগলেও নিজেকে কখনও গ্রেট বোলার মনে হয়নি।
২০০২ সালের ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় এন্ডারসনের। পরের বছর লর্ডসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্টে পথচলা শুরু হয় তার। এরপর গত ২২ বছরে দেশের হয়ে ৪০১টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৯৯১ উইকেটও নিয়েছেন এন্ডারসন। যার সুবাদে বিশ^ ক্রিকেটে তৃতীয় এবং পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হিসেবে রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়েছেন তিনি। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারে শীর্ষ দু’টিস্থানে আছেন দুই স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন ও অস্ট্রেলিয়ার প্রয়াত শেন ওয়ার্ন। মুরালি ৪৯৫ ম্যাচে ১৩৪৭ এবং ওয়ার্ন ৩৩৯ ম্যাচে ১০০১ উইকেট শিকার করেছেন।
১৮৮ টেস্টে ৭০৪, ১৯৪ ওয়ানডেতে ২৬৯ ও ১৯টি টি-টোয়েন্টিতে ১৮ উইকেট শিকার করেছেন এন্ডারসন। কিন্তু ২২ গজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে নিজের কাছে নিজেকে কখনও সেরা বোলার মনে হয়নি তার। স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এন্ডারসন বলেন, ‘আমার ক্যারিয়ারে নিজেকে কখনো গ্রেট বোলার মনে হয়নি। আমি জানি, এটা শুনতে অদ্ভুত লাগবে। আমি সব সময় এটাই ভেবেছি, কিভাবে পরের সিরিজে আমি ভালো করতে পারি? আমার ক্যারিয়ার লম্বা করতে এটাই সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্যারিয়ারে অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কোন সিরিজে নিজেকে অনেক দুর্দান্ত মনে হয়, আবার কিছু সিরিজে পুরোপুরিভাবে হয় না। একজন ব্যাটার আপনার চেয়ে ভালো করে থাকে।’
ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটার বিরাট কোহলির উদাহরণ টেনে আনেন এন্ডারসন। তার মতে, ‘বিরাট কোহলির বিপক্ষে শুরুতে যখন খেলতাম, তখন মনে হতো প্রতি বলেই কোহলিকে আউট করতে পারবো। কিন্তু সম্প্রতি মনে হচ্ছে, আমি তাকে আউট করতে পারবো না। তখন নিজেকে খুব ছোট মনে হয়।’
লর্ডসে শেষ টেস্টে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে গার্ড অব অনার পান এন্ডারসন। নিজের ক্যারিয়ারের দুর্দান্ত পারফরমেন্স দিয়ে অন্যান্যদের অনুপ্রাণিত করতে পারাকে সার্থকতা মনে করেন ৪১ বছর বয়সী এন্ডারসন। তিনি বলেন, ‘আমি যেভাবে এই খেলাকে এত ভালোবাসি, সেখানে আমি এমন মানুষদের পছন্দ করবো, যারা এই খেলাকে সাদরে গ্রহণ করেছে কারণ তারা আমার বোলিং দেখেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বোলিং দেখে আনন্দ পেয়েছে মানুষ। শিশু বা বড়রাও আছে, যারা সুইং বোলিং করার শিল্পকে আয়ত্ব করেছে। কারণ আমাকে বোলিং করতে দেখেছে তারা। এই বিষয়টি আমাকে খুব আনন্দ দেয়।’
২২ গজের লড়াই থেকে অবসর নিলেও, ইংল্যান্ডের ড্রেসিংরুমেই থাকছেন এন্ডারসন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে বোলিং মেন্টর হিসেবে কাজ করবেন তিনি।