ক্যারিবিয়ান দেশ জ্যামাইকাতে সমবর্তী হাই কমিশনার হিসেবে পরিচয়পত্র পেশ করছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। দ্বীপরাষ্ট্র জ্যামাইকার রাজধানী কিংস্টনে অবস্থিত কিংস হাউজে জ্যামাইকার গভর্ণর জেনারেল স্যার প্যাট্রিক লিন্টন অ্যালেনের কাছে তিনি গতকাল মঙ্গলবার পরিচয়পত্র পেশ করেন।
নব-নিযুক্ত হাই কমিশনার মুহিত জ্যামাইকার গভর্নর জেনারেল, সরকার ও জনগণের প্রতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেন। তিনি আগামী দিনগুলোতে জাতিসংঘ ও কমনওয়েলথসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ ও জ্যামাইকার ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেন। তাঁরা একমত হোন যে প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশ দু’টির দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও গভীর ও সম্প্রসারিত করার অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
হাইকমিশনার মুহিত ও গভর্নর জেনারেল বাংলাদেশ ও জ্যামাইকার মধ্যে নিয়মিত ফরেন অফিস কনসাল্টেশন (এফওসি) আয়োজনের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে আলোচনা করেন, যা দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে সামগ্রিক দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম হতে পারে। তাঁরা দু’দেশের অভিন্ন মূল্যবোধ ও ক্রিকেট ও সঙ্গীতের প্রতি গভীর নিবেদন ও একাত্ম বোধের প্রতি আলোকপাত করেন।
গভর্নর জেনারেল হাই কমিশনার মুহিতকে শুভ কামনা জানান এবং তাঁর মেয়াদকালে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
এর আগে মুহিত জ্যামাইকার পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী সিনেটর কামিনা জনসন স্মিথ এর সাথে তাঁর দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এসময় জ্যামাইকার পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন কর্মকান্ড ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। জ্যামাইকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের হাই কমিশনার পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন এবং উভয়েই বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার গভীর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা, ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলের সফর ও সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও বাড়ানো যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন হাই কমিশনার। তিনি বাংলাদেশ ও জ্যামাইকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
আলোচনায় হাইকমিশনার মুহিত উভয় দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সফর বিনিময়ের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন এবং ক্যারিকমের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নে জ্যামাইকার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
হাই কমিশনার দু’দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ের প্রস্তাব করেন।
তিনি জ্যামাইকার গভর্নর জেনারেল এবং পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
হাই কমিশনারের স্ত্রী মিসেস রুবি পারভীন ও জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কাউন্সেলর মো. রফিকুল আলম মোল্লা হাই কমিশনারের সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন।