অলিম্পিকের ইতিহাসে প্রথম চাইনিজ টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে নারীদের এককে স্বর্ণ জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন ঝেং কিনওয়েন। শনিবার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার ডোনা ভেকিচকে ৬-২, ৬-৩ গেমের সরাসরি সেটে পরাজিত করে ২১ বছর বয়সী ঝেং প্রথম স্থান অর্জন করেন। ২০০৪ এথেন্স অলিম্পিকের নারী ডাবলসে লি টিং ও সুন টিয়ানটিয়ানসের পর প্রথম কোন চাইনিজ হিসেবে টেনিস ইভেন্টে স্বর্ণ জয় করলেন ঝেং।
রোলা গাঁরোর এই কোর্ট ফিলিপ চাট্রিয়ারেই ২০১১ সালে লি বা প্রথম কোন চাইনিজ খেলোয়াড় গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন।
২০০৮ সালে লি ঘরের মাঠের অলিম্পিকে চতুর্থ স্থান অর্জণ করেছিলেন। অলিম্পিকে এখনো পর্যন্ত চায়নার সবচেয়ে বড় অর্জন শেষে ঝেং বলেছেন, ‘আমি আবেগ ধরে রাখতে পরাছি না। প্রতিটি রাউন্ড এখানে অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু দেশের হয়ে পদক জয়ের জন্য আমি সম্ভাব্য সব কিছুই করার চেষ্টা করেছি। আমি দেশকে গর্বিত করতে চেয়েছি। নিজের জন্য আমি সত্যিই গর্বিত। আমি নিশ্চিত দেশে আমার পরিবার টিভিতে এই কৃতিত্ব উপভোগ করেছে। আমি শুধু প্রতি ম্যাচে লড়াই করতে চেয়েছি। দেশের হয়ে খেলার সময় বিশেষ কিছু শক্তি আমি খুঁজে পাই। কখনোই হাল ছেড়ে দেইনা।’
বিশে^র সাত নম্বর খেলোয়াড় ও অস্ট্রেলিয়ান ওপেন রানার-আপ ঝেং শুরুতেই ২-০ গেমের লিড নেন। এর থেকে আর বেরিয়ে আসতে পারেননি ভেকিচ। অষ্টম গেমে আবারো ব্রেক পয়েন্ট জিতে প্রথম সেট জয় করে নেন ঝেং।
তৃতীয় রাউন্ডে এমা নাভারোর বিপক্ষে কোনমতে জয় নিয়ে কোর্ট ছেড়েছিলেন ঝেং। এরপর চারবারের ফ্রেঞ্চ ওপেন বিজয়ী বিশে^র এক নম্বর তারকা ইগা সোয়াইটেককে সেমিফাইনালে সরাসরি সেটে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেন। ঐ ম্যাচগুলোর পরীক্ষায় ফাইনালে কাজে লাগিয়েছেন ঝেং। দ্বিতীয় সেটেও তিনি ২৮ বছর বয়সী ভেকিচের বিপক্ষে শুরুতেই ২-০ গেমের লিড নেন। তৃতীয় রাউন্ডে বিশে^র দুই নম্বর খেলোয়াড় কোকো গফকে বিদায় করা ভেকিচ কোয়ার্টার ফাইনালে মার্তা কোস্টিয়াকের বিপক্ষে ম্যাচ পয়েন্ট সেভ করে শেষ পর্যন্ত জয় তুলে নিয়েছিলেন। চতুর্থ ব্রেক পয়েন্ট তুলে নিয়ে ৫-৩ গেমে এগিয়ে থাকার পর পরের গেমেই বিজয় নিশ্চিত করেন ঝেং।
নাভারোর পর বিশে^র সাবেক নাম্বার ওয়ান এ্যাঞ্জেলিক কারবারকে হারাতে টানা দুই ম্যাচে তিন ঘন্টার লড়াই করেছেন ঝেং। ফাইনালের আগে নোভাক জকোভিচেরও প্রশংসা পেয়েছেন ঝেং। ঝেংয়ের খেলার ভক্ত হিসেবে জকোভিচ বলেছেন, ‘ব্যক্তি হিসেবে সে দুর্দান্ত। আমি সত্যিই ঝেংকে দারুন পছন্দ করি। ফাইনালে খেলা চায়নার জন্য অনেক বড় বিষয়। একইসাথে ঝেংয়ের জন্যও। বিশে^র অন্যতম বৃহৎ দেশ হিসেবে লি না’র পর চায়না একজন সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নের খোঁজে ছিল।
আনা ক্যারোলিনা শিমেডলোভাকে ৬-২, ৬-১ গেমে হারিয়ে ব্রোঞ্জ পদক জয় করেছেন সোয়াইটেক।
যুক্তরাষ্ট্রের অস্টিন ক্রাইচেক রাজিব রামকে ৬-৭ (৬/৮), ৭-৬ (৭/১), ১০-৮ গেমে পরাজিত করে পুরুষ ডাবলসে স্বর্ণ জয় করেছেন অস্ট্রেলিয়ান ম্যাথু এবডেন ও জন পিয়ার্স। ১৯৯৬ আটালান্টা গেমসে টড উডব্রিজ ও মার্ক উডফোর্ডের পর দ্বিতীয় অস্ট্রেলিয়ান জুটি হিসেবে অলিম্পিকে এটি দ্বিতীয় স্বর্ণ পদক। তিন বছর আগে পিয়ার্স এ্যাশলে বার্টিকে সাথে নিয়ে টোকিও গেমসে মিক্সডা ডাবলসে ব্রোঞ্জ পদক জয় করেছিলেন।