রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা-বাঘাইহাট সড়কের অন্তত তিনটি স্থানে পৃথকভাবে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। পরে সওজ সহায়তায় পাঁচ ঘণ্টার পরে সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
বুধবার (২১ আগস্ট) সকালে বাঘাইছড়ির মারিশ্যা-বাঘাইহাট কর তিনটি স্থান চারকিলো, নয়কিলো এবং ও চৌদ্দকিলো এলাকায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। তবে সড়ক বিভাগ মাটি সরিয়ে সড়কে যানচলাচল সচল করলেও গত মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ি দীঘিনালা উপজেলার কবাখালী অংশের সড়ক ডুবে যাওয়ায় রাঙামাটির সাজেকসহ বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলা সঙ্গে সারাদেশে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে সাজেকে বেড়াতে গিয়েও আটকা পড়া আড়াই শতাধিক পর্যটক এখনও সাজেক ছাড়তে পারেনি।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) খাগড়াছড়ি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান বলেন, বুধবার সকালে বাঘাইছড়ির মারিশ্যা সড়কে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের সড়ক বিভাগের লোকজন পাঁচ ঘণ্টা সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে সড়কে যানচলাচল সচল করেছে। তবে দীঘিনালার কবাখালী সড়কের অংশ পানিতে ডুবে গিয়ে সাজেক ও বাঘাইছড়ির যানচলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, টানা এক সপ্তাহ ধরে ভারি বৃষ্টিপাতে কাচালং নদের পানি বেড়ে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চলতি বছরের মধ্যেই চারবার বাঘাইছড়ি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এবারের বন্যায় বাঘাইছড়ি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার থেকে বাঘাইছড়ি উপজেলার মাচালং নদীর পানি বাড়ায় উপজেলা নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে শুরু করে। এতে উপজেলার সদর, বারোবিন্দু ঘাট, মাস্টার পাড়া, লাইন্যাঘোনা, এফ ব্লক, পশ্চিম মুসলিম ব্লক, রূপকারী, পুরাতন মারিশ্যা, খেদারমারাসহ বাঘাইছড়ি ও ৮টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে থেকে খোলা হয়েছে ৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র। এতে আশ্রয় নিয়েছে ৪০টি পরিবার। তবে বৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় ইউনিয়নগুলোর পরিস্থিতি জানতে পারছেন না উপজেলা প্রশাসন।
পাহাড়ি ঢলে সড়ক ডুবে যাওয়ায় রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ভ্যালি পর্যটনকেন্দ্রে আটকে পড়া আড়াই শতাধিক পর্যটক ফিরতে পারেনি। পাহাড়ি ঢলে সাজেক-বাঘাইহাট সড়কের দুই স্থান ডুবে গেছে বলে জানা গেছে। এতে গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে ওই সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীণ আক্তার জানান, সাজেক সড়কের দীঘিনালার কবাখালী অংশের সড়ক ডুবে যাওয়ায় ও কয়েকটি স্থানে পাহাড়ধসের কারণে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। সাজেকে আনুমানিক প্রায় আড়াই শতাধিক পর্যটক আটকা আছে। বন্যা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। পানিবন্দি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে। উপজেলায় প্রশাসন থেকে ৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক ঠিকমতো না থাকায় ইউনিয়নগুলোর পরিস্থিতি জানা যাচ্ছে না।