দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই প্রখ্যাত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আবারো চাঁদাবাজি শুরু করেছে দুর্বৃত্তরা। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যবস্থাপনাকে হুমকি দিচ্ছে এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে টোল দিতে বলছে।
এমনকী, কিছু প্রবাসী বাংলাদেশিকেও এ ধরনের চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত পাওয়া গেছে। বিদেশ থেকে টোল চাওয়া চাঁদাবাজদের একজন হলেন তানভীর অপু। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে লক্ষ্যবস্তুদের বার্তা পাঠাচ্ছেন এবং অবিলম্বে টোল পরিশোধ করতে বলছেন।
আশঙ্কার মধ্যে কয়েকজন ভুক্তভোগী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বাংলাদেশ পোস্ট একজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে একজন ব্যবসায়ীর করা জিডির কপি পেয়েছে।
ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ফিনল্যান্ডে অবস্থানরত প্রবাসী তানভীর অপু সম্প্রতি প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। প্রতিবেদকের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করার সময় ওই ব্যবসায়ী বলেন, সম্প্রতি প্রবাসী অপু টোল বাবদ দুই কোটি টাকা দাবি করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যবসায়ী বলেন, টোল দিতে ব্যর্থ হলে অপু আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, প্রবাসী তানভীর অপু প্রভাবশালীদের ছবি দিয়ে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করছেন। এসব ছবি সে তার টার্গেটে পাঠাচ্ছে।
রেকর্ডগুলি দেখায় যে ওপু, যিনি তাকে একজন বিশ্ব ভ্রমণকারী হিসাবে পরিচয় করিয়েছিলেন, তিনি অপমানজনক ভাষায় বার্তা পাঠিয়েছেন এবং একজন ব্যবসায়ীকে হুমকি দিয়েছেন।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন তিনি। তদুপরি, যারা তার দাবি মানতে অস্বীকার করবে তাদের অপহরণ করার জন্য তিনি গোয়েন্দা সংস্থাকে জড়িত করার হুমকি দিয়েছেন।
কিছু অভিযোগকারী তাদের সংগঠনের স্বার্থে প্রতিবেদনে নাম ও প্রতিষ্ঠান উল্লেখ না করার জন্য এই সংবাদদাতাকে অনুরোধ করেছেন।
তারা বলেন, তানভীর অপুর মতো ব্যক্তিরা বর্তমান পরিস্থিতিকে কাজে লাগাচ্ছে, কারণ নতুন সরকার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ পুনর্গঠনে ব্যস্ত। বারবার ফোনে মন্তব্য করার চেষ্টা করা হলেও তানভীর অপু কলে কোনো কর্ণপাত করেননি।
কলাবাগান থানায় করা জিডিতে দুটি ফোন নম্বর থেকে চাঁদা দাবি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
জুলাই মাসে সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে অপুর বিরুদ্ধে আরেকটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরিস্থিতির গাম্ভীর্য টের পেয়ে সে সে সময় ফিনল্যান্ডে পালিয়ে যায়।
১৭ আগস্ট দেশে ফেরার পর তিনি চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
রাজশাহীর শিরোইলে জন্ম নেওয়া অপুর বিরুদ্ধে তার প্রথম স্ত্রীসহ দেশ-বিদেশে বসবাসরত অনেকের কাছ থেকে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
রাজশাহীর সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে অপু তার এলাকায় সবার কাছে পরিচিত।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য বারবার অপুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে, বর্তমানে বিষয়টি তদন্ত করছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। (তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ পোস্ট)