গাড়ি, বাড়ি, প্লট, ফ্ল্যাট-কী নেই কুমিল্লার সাবেক সংসদ-সদস্য (এমপি) আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও তার মেয়ে সাবেক মেয়র সূচনার। রীতিমতো গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। শুধু নিজের নামেই নয়, স্ত্রী, মেয়ের জামাই, ভাই, ভাতিজার নামে গড়ে তুলেছেন বিপুল সম্পত্তি। অভিযোগ রয়েছে এমপি থাকাকালীন টেন্ডারবাজি, গোমতী নদীর মাটি কাটা, পাহাড় কাটাসহ নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। আরও অভিযোগ রয়েছে, তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাকে করা হতো নিষ্ঠুর নির্যাতন। তার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সাংবাদিক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতা ও সাধারণ মানুষ।
তার হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সময় টেলিভিশনের কুমিল্লা প্রতিনিধি বাহার রায়হান। সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারসহ তার অনুসারী ৬০ জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লার আদালতে মামলা করেছেন সাংবাদিক বাহার রায়হান। সাবেক এমপির বিপুল সম্পদের অনুসন্ধান চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
যুগান্তরের অনুসন্ধানে তার ও তার মেয়ের বিপুল সম্পদের সত্যতা মিলেছে। ঢাকা উত্তরায় তার ও তার মেয়ে, স্ত্রীর নামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। সিঙ্গাপুরে কিনেছেন দুটি বাড়ি, স্ত্রী ও তিন মেয়ের নামে রয়েছে প্রচুর স্বর্ণালংকার।
কুমিল্লা চলত তার ইশারায়। ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে গোমতী নদী মাটি কাটা পর্যন্ত। তার শতশত গুন্ডাপান্ডা এসব নিয়ন্ত্রণ করত। কেউ কিছু বলার সাহস পেত না। কেউ গোমতী নদী মাটি কাটা বন্ধ করতে বাধা দিলে চলত অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতন। পরিবেশ বন অধিদপ্তরের এক নারী কর্মকর্তাকেও দিয়েছিলেন হত্যার হুমকি। তার গুন্ডাপান্ডারা কুমিল্লা ক্লাবকে টর্চার ক্লাবে পরিণত করেছিলেন।
সরকার পতনের পর আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার তার এই প্রিয় ক্লাব পুড়িয়ে দিয়েছেন সাধারণ ছাত্রজনতা। বিলাসবহুল গাড়ি ছাড়া কখনো চলাফেরা করতেন না। কোটি টাকা মূল্যের রয়েছে তার চারটি গাড়ি। তার তিন মেয়ে চলাফেরা করতেন কোটি টাকার গাড়িতে।
সরকার পতনের পর কুমিল্লার এ সংসদ-সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার ও তার মেয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন মেয়রকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারা সপরিবারে বিদেশে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকার পতনের পর আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারের বাসভবনে আগুন দিয়েছেন দুর্বৃত্তরা। বর্তমানে তার পরিবারের সবাই লাপাত্তা। তাদের সম্পদের অনুসন্ধান চলছে।