দেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৫২-এ পৌঁছেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফেনী জেলা, যেখানে ১৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট এই বন্যা গত সপ্তাহ থেকেই দেশের ১১টি জেলাকে বিপর্যস্ত করে রেখেছে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা এই দুর্যোগে ৫৫ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের ঘরবাড়ি, ফসল ও জীবনযাত্রা পুরোপুরি ব্যাহত হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ১১ জেলায় ১০ লাখ ৭২ হাজার ৫৭৯টি পরিবার এখনো পানিবন্দি; ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫৪ লাখ ৮০ হাজার ৪৬৩ জন।
মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৩৯ জন, শিশু ৭ জন এবং নারী ৬ জন। সবচেয়ে বেশি ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ফেনীতে। এরপর কুমিল্লায় ১৪ জন, চট্টগ্রামে ৬ জন, নোয়াখালীতে ৮ জন, কক্সবাজারে ৩ জন এবং খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, লক্ষীপুর ও মৌলভী বাজারে ১ জন করে মারা গেছেন। এছাড়াও মৌলভী বাজারে একজন নিখোঁজ রয়েছেন।
আগের দিন বন্যায় ৩১ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল মন্ত্রণালয়। আর ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা জানিয়েছিল ৫৮ লাখ।
গত ২০ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া ভয়াবহ বন্যায় দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উজানের তীব্র ঢল এবং অতি ভারি বৃষ্টির কারণে ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর এবং কক্সবাজার জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্গতদের সহায়তায় ৪ হাজার ৪০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় ৫ লাখ ২ হাজার ৫০১ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়াও, ৩৬ হাজার ৪৪৮টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলী রেজা।
এই বন্যায় কয়েক লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের বাড়িঘর, ফসল এবং অন্যান্য সম্পদ পানিতে ডুবে গিয়েছে। সরকার ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দুর্গতদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ এবং পুনর্বাসন কাজে ব্যস্ত রয়েছে।