দখলবাজ-চাঁদাবাজদের ‘দুষ্কৃতকারী’ অভিহিত করে তাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। শুক্রবার দুপুরে এক অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এই আহ্বান করেন। তিনি বলেন, দেশটা আমাদের। কিছু মুখোশধারী বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে, চাঁদাবাজির চেষ্টা করছে। বিএনপি স্পষ্টভাবে বলেছে, এরা দুষ্কৃতকারী। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, এদেরকে ঠেকাতে হবে… পুলিশে দেন। এই জায়গায় কোনো আপস করা যাবে না। সে যেই হোক তাকে মানুষের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, অর্থনীতির স্বার্থে, রাজনীতির স্বার্থে এই দুর্বৃত্তায়ন যারা করে গেছে তাদেরকে আমরা ১৭ বছর এদের বিরোধিতা করেছি। সেই দুর্বৃত্তদের সমর্থন করার কোনো সুযোগ নাই… যেখানে যে অবস্থায় পাবেন তাদেকে আইনের কাছে সোপর্দ করতে হবে। এ ব্যাপারে দলের নেতকর্মীদের ‘সজাগ’ থাকার পরামর্শ দিয়ে দুদু বলেন, একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়াতে হবে। সকল রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায়নের প্রশ্নে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সকল সময়ে সতর্ক থাকতে হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এই অবস্থান কর্মসূচি হয়।
‘গণতন্ত্রীদের অনেকেই মুক্তি পায়নি’
শামসুজ্জামান বলেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদের প্রতীক। এই ভিন্নতা যারা মাথায় না নিতে পারবেন তারা বাংলাদেশের রাজনীতিতে কি হচ্ছে কি হবে এটা ব্যাখ্যা করে সামনে এগোতে পারবেন না। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছে সরকার… আমরা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার মামলা, তারেক রহমানের মামলা, মির্জা ফখরুল ইসলাম মামলা… বিএনপিসহ বিরোধী দলের আড়াই লাখ মামলার অধিনে ৬০ লাখ আসামি আছে। এরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে…অনেকে জেলে আছে…যাবজ্জীবন, ফাঁসির অর্ডার নিয়ে জেলে আছে তারা এখনো মুক্তি পাইনি।
এদের মামলা যতক্ষণ প্রত্যাহার না হবে, এদের মুক্তি যতক্ষণ না হবে ততক্ষণ ধরেই নিতে হয়… এই সরকারের বড় দাগের কোনো কাজ এখনো তারা সম্পন্ন করতে পারেনি। এই সরকার আমাদের সরকার, গণতন্ত্রের সরকার, আন্দোলনের সরকার, ছাত্র-জনতার সরকার… তাহলে গণতন্ত্রের পক্ষে যারা কাজ করছে তারা যদি মসিবতে থাকে, তারা যদি কষ্টে থাকে, তারা যদি এখনো নির্যাতনের মুখোমুখি হয় তাহলে এটা এই সরকারের জন্য খুব ভালো সংবাদ বয়ে আনে না। কারণ এই সরকার তো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্যে আমরা অধিষ্ঠিত করেছি। ‘কিছু মানুষ ভোটকে ভয় পায়’ দুদু বলেন, কেউ কেউ বলছেন, বন্যায় ভাসছি…. আবার এখন নির্বাচনের দরকার কি? যারা যেমনে তারা তেমনই কথা বলতে বলে এটা আমার ধারণা। কিছু মানুষ আছে, কিছু দল আছে আমাদের সঙ্গে থাকলেও ১৯টা সিট পায়, আমাদের বেরিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকলে তারা তিনটা সিট পায় … তারা ভোট তো ভয় পাবে… এটা অস্বাভাবিক কিছু না। সে জন্য ভোট ছাড়া, মানুষের ভোটিং পাওয়ার ছাড়া কোনো দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এটা আমার জানা নেই। সে জন্য এক নম্বর চয়েজ… দিন তারিখ বিএনপি দেয় নাই, আমি দিতে চাই না… যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংবিধানের আলোকে গণতন্ত্রের ভাবনায় নির্বাচনের মুখোমুখি জাতিকে করতে হবে… জাতি ঠিক করে নেবে কার প্রয়োজন। এ জন্য আমাদের ভালোবাসার এই সরকার বলব, মানুষের ভোটাধিকারটা দেন। যাতে প্রশাসনের লোক, আইনশৃঙ্খলার লোক, সেনা বাহিনীর লোক, কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষ ভোটটা দিয়ে তারা প্রতিনিধিকে নির্বাচন করতে পারে….এই অধিকারটুকু আপনি দেন।
সংগঠনের আহ্বায়ক এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জেল হোসেনে হৃদয়ের সঞ্চালনায় মানবন্ধনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, শাহ মো. নেসারুল হক, কৃষক দলের ওবায়দুর রহমান টিপু, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।