বাংলাদেশ ব্যাংক এক নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার থেকে চেক দিয়ে ব্যাংক থেকে আরও বেশি টাকা তুলতে পারবেন। আগে চার লাখ টাকা পর্যন্ত তুলতে পারতেন, এবার সেই সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ, এবার থেকে এক সপ্তাহে আপনি চেক দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ টাকা তুলতে পারবেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সিদ্ধান্তটি নিয়েছে কেন, তা জানা যায়নি। তবে তারা নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সব ব্যাংককে এই নতুন নিয়ম মেনে চলতে বলেছে।
দীর্ঘদিন ধরে চলা দুর্নীতি, লুটপাট ও অনিয়মের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এই খাতকে পুনরুদ্ধার ও স্বচ্ছতা আনয়নে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।
বিশেষ করে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক লুটপাট, শেয়ারবাজারে কারসাজি এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক অপরাধের মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ সম্পদের বিষয়টি সরকারের গভীর উদ্বেগের কারণ। এই অবৈধ সম্পদ দেশের বাইরে পাচার হয়ে যাওয়া রোধ করতে সরকার কঠোর নজরদারি বৃদ্ধি করেছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই উদ্যোগ দেশের অর্থনীতিকে সুস্থ ও স্থিতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর দেশের ব্যাংকিং খাতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়। এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবে, ব্যাংক থেকে একবারে এক লাখ টাকার বেশি টাকা তোলা নিষিদ্ধ করা হয়। অর্থাৎ, ৮ আগস্টের পর থেকে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানই ব্যাংক থেকে চেকের মাধ্যমে একবারে এক লাখ টাকার বেশি টাকা তুলতে পারবে না।
এই নতুন নিয়মের ফলে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় কিছুটা পরিবর্তন এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক চেকের মাধ্যমে নগদ টাকা উত্তোলনে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকার সীমা নির্ধারণ করেছে। এর পাশাপাশি, কোনো লেনদেনে সন্দেহাবহ কার্যকলাপ লক্ষ্য করা হলে সেই লেনদেন বন্ধ করার নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে।
এই নতুন নির্দেশনার মধ্য দিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় এবং অবৈধ কার্যকলাপ রোধ করতে চায়। যদিও চেকের মাধ্যমে নগদ উত্তোলনের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে গ্রাহকরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে যেকোনো পরিমাণ টাকা স্থানান্তর করতে পারবেন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ব্যাংকগুলোয় অর্থ উত্তোলনের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি বিভাগ নিয়ন্ত্রণমূলক নির্দেশনা জারি করেছে। বিশেষ করে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রেণির কর্মকর্তারা ব্যাংক থেকে ব্যাপক হারে অর্থ তুলতে শুরু করলে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
এই অবস্থায় অর্থপাচার রোধে সতর্ক থাকতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইউ) দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছে। বিএফআইউর পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোর প্রধান অর্থপাচার নিরোধ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।