খুলনা বন বিভাগের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ সুন্দরবন আবারও পর্যটক, বাওয়ালি, কাঠুলিয়া, জেলে ও মৌয়ালদের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে।
প্রতি বছরের মতো এবারও গাছপালা বৃদ্ধি এবং নদী-খালের মাছের প্রজননকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে গত তিন মাস ধরে সুন্দরবনে প্রবেশ বন্ধ ছিল। খুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দেব ইউএনবিকে জানিয়েছেন, এই সময়কালে সুন্দরবনের পরিবেশ পুনরুদ্ধারে অনেক সহায়তা মিলেছে।
আগামীকাল ১ সেপ্টেম্বর সুন্দরবন খুলে দেওয়ার কারণে সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য বাওয়ালি, কাঠুরিয়া ও জেলেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকে তাদের নৌকা ও ট্রলারে রং দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ নতুন নৌকা বানাচ্ছেন।
সুন্দরবন বন্ধ থাকায় কয়রা ও পাইকগাছার অনেক মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে। সুন্দরবন খোলার খবরে স্থানীয়রা আনন্দিত। পর্যটক পরিবহনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরাও পর্যটকদের নিয়ে সুন্দরবন ভ্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ধামরাইল গ্রামের মুন্সী কামরুজ্জামানের জীবন সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। সুন্দরবন বন্ধ থাকায় তিনি নৌকা মেরামত ও নতুন জাল বুনে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি জানান, সুন্দরবন খুললেই তিনি আবার মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন।
আগামীকাল থেকে সুন্দরবন খুলতে যাওয়ায় পর্যটক পরিবহনের সঙ্গে জড়িত ডেভিড আসলাম উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, প্রতি বছর আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ পর্যটক সুন্দরবন ভ্রমণ করে। সুন্দরবন খোলার সাথে সাথেই তারা পর্যটকদের নিয়ে সুন্দরবনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সুন্দরবন, বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ, বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল। এই বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনে সুন্দরী, গরান, কেওড়া সহ নানা জাতের গাছের পাশাপাশি অসংখ্য প্রজাতির মাছ ও কাঁকড়া পাওয়া যায়। এই জৈববৈচিত্র্যই সুন্দরবনকে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সাহায্য করে। বিভিন্ন জলজ প্রাণী ও বনজ সম্পদ থেকে প্রতি বছর রাজস্ব আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আসে।