জেলার আখাউড়া ও কসবায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বাসা-বাড়ি থেকে নেমে গেছে পানি। তবে এখনও তলিয়ে আছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এতে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন কৃষক ও মৎস্য চাষিরা।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো জানিয়েছে- অচিরেই ক্ষতিগ্রস্তদের পূণর্বাসনসহ প্রণোদনা দিতে নেওয়া হচ্ছে উদ্যোগ। তারা জানিয়েছে- এবারের বন্যায় আখাউড়া ও কসবায় ৮০ হাজারের অধিক লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জানা যায়, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারনে জেলার আখাউড়া ও কসবায় গত ২১ আগস্ট থেকে সৃষ্ট বন্যার কারণে আখাউড়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বন্যার পানি ছড়িয়ে পড়েছিল। এতে কমপক্ষে ৩৫টি বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়। ডুবেছে সদ্য রোপণ করা ধানি জমি, বীজতলা ও সবজির জমির। স্থানীয় কৃষকরা ঋণ করে চলতি রোপা আমন মৌসুমে জমিতে রোপণ করেছিলেন ধানের চারা। তবে বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে সবই। এখন দ্বিতীয়বারের মতো ধানের চারা রোপনের চেষ্টা করছেন।
কসবার ধজনগর এলাকার কৃষক আইয়ুব আলী জানান, জমি ডুবে গেছে। তবে নতুন করে ধানের চারা পাচ্ছি না। বায়েক গ্রামের কৃষক আলী হোসেন জানান, বন্যায় ধানের জমি, বীজতলা ও সবজি বাগান সবই গেলো।
জেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, আখাউড়ায় ১২০ হেক্টর বীজতলা, ১ হাজার ৭৭০ হেক্টর রোপা আমন ও ৭৫ হেক্টর সবজি বাগান বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর কসবা উপজেলায় বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছিল তিনটি ইউনিয়ন, বায়েক, গোপিনাথপুর ও কাইয়ুমপুরে ২৬টি গ্রাম। এতে কৃষকের বীজতলা, রোপা আমন ও সবজি মিলে ৪১২০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জেলা মংস্য বিভাগের তথ্যমতে, ক্ষতি হয়েছে মৎস্য খাতেও। আখাউড়ায় ৪৩০ ও কসবায় ৪০০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। মৎস্য চাষিরা জানান, লাভের আশায় ব্যাংক ঋণ ও ধার দেনা করে মাছ চাষ করেছিলেন। তবে আকস্মিক বন্যায় সব হারিয়ে এখন তারাও নিঃস্ব। আখাউড়া মৎস্য চাষি আবুল কাসেম বলেন- ‘আমার ৩টি পুকুর ছিল সবগুলো মাছ বন্যার পানিতে চলে গেছে।’
জেলা মংস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রওনক জাহান জানান, প্রাথমিকভাবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তালিকা প্রণয়ন করে আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আশা করি সরকার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুশান্ত সাহা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা ইতিমধ্যে প্রেরণ করা হয়েছে।