নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ডাকসুর সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।
খোকন বলেন, ‘আমাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্ব জুলকারনাইন সায়ের ফেসবুকে যে পোস্ট করেছেন তা নিয়ে আমি প্রত্যুত্তর দিচ্ছি। জুলকারনাইন সায়ের তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে আমাকে কেন্দ্র করে একটি পোস্ট দিয়ে যে সব ঘটনার বিষয় অবতারণা করেছেন তা একান্তই সত্যের অপলাপ ছাড়া আর কিছুই নয় এবং এতে করে একটি অনভিপ্রেত বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে আমাকে কেন্দ্র করে; যা রীতিমতো আমার জন্য অস্বস্তিকর।’
তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে ওই দিন অর্থাৎ ৩১ আগস্ট আনুমানিক রাত ৮টায় আমি গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় (অবশ্যই কোনো পাঁচ তারকা হোটেল নয়) আমার ব্যক্তিগত পরিচিত সাবেক এক সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাই । ওখানে স্বাভাবিকভাবেই অবস্থানকালে পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে আমরা একত্রে চা পান করি ও পারস্পরিক কুশলাদি বিনিময় করি। এ সময়ে এনামুল হক দোলন নামে আমার এক আত্মীয় আমাকে ফোন করে আমি কোথায় আছি জানতে আগ্রহ প্রকাশ করে জানালে সে ক্রাউন প্লাজার রেস্টুরেন্টে এসে আমার সঙ্গে দেখা করে। উল্লেখ্য, দোলন বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সাবেক সভাপতি। তাদের সমিতিসংক্রান্ত বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকের ছোট ছেলে সায়েম সোবহান আনভিরের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব ও জটিলতার কথা জানিয়ে বলে তারা এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ইসরাক হোসেনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করে তাদের সমস্যাটি তুলে ধরেছেন। দোলন আমাকে আরও জানায়, মির্জা আব্বাস ভাইকে বিষয়টি জানালে তিনি আমার এলাকার লোক হিসেবে তাকে আমার সঙ্গে দেখা করতে পরামর্শ দেন। একপর্যায়ে দোলন তাদের সমিতিসংক্রান্ত সমস্যাটি তুলে ধরলে আমি অপ্রস্তুত ও বিব্রত বোধ করি, কারণ এটি আমার রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বিষয় নয়। এখানে উল্লেখ্য, যখন আমি সেখানে অবস্থান করি তখন এক পর্যায়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম, গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান, কৃষিবিদ হারুনুর রশিদসহ অনেকের সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়, কথা হয়। অর্থাৎ বিষয়টি গোপন বিষয় ছিল না।
খোকন আরও বলেন, আমার আদৌ জানা ছিল না দোলন আমার সঙ্গে দেখা করতে আসার নামে তার সঙ্গে অন্য কাউকে নিয়ে আসবে কিনা, কিন্তু ঘটনাস্থলে এসে দোলন তাদের সমিতিসংক্রান্ত সমস্যার কথা তুলতে গিয়ে দিলীপ আগরওয়াল নামক জনৈক ব্যক্তির সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয়। আগরওয়াল নামের ব্যক্তিকে আমি কখনোই চিনতাম না; তার সঙ্গে আমার পূর্ব পরিচয়ও ছিল না। ঘটনাটি একেবারেই আকস্মিক, যা আমাকে রীতিমতো বিব্রত ও অপ্রস্তুত করেছে।
তিনি বলেন, তা ছাড়া বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সাবেক সভাপতি এনামুল হক দোলন তাদের সমিতিকেন্দ্রিক ঝামেলা জটিলতা বিষয়ে আমাকে আমাদের দলের মহাসচিব ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের সঙ্গে উক্ত বিষয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে দেওয়ার অনুরোধ জানালে আমি তাতে অপারগতা জানাই। কেন না আমি শুরুতেই ঘটনা শুনে অপ্রস্তুত ও বিব্রত বোধ করেছিলাম।
সুতরাং উপরোক্ত বিষয়ের আলোকে আমি দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই, আমার ছাত্র জীবনের রাজনীতি-লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস এবং জাতীয় রাজনীতিতে আমার ত্যাগ, অবিচলতা, আনুগত্য, শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা ও নৈতিকতার প্রশ্নে আপোষহীন অবস্থানের কথা আমাদের দলের প্রতিটি নেতাকর্মী অবগত। আমার ইন্টিগ্রিটির প্রশ্নে তারা আস্থাশীল বলেও আমি বিশ্বাস করি। তবুও জুলকারনাইন সায়েরের ফেসবুক পোস্টিংয়ে উল্লিখিত বিষয়ের প্রতি আমারও দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। ওই বর্ণনার সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে বাস্তবতা ও সত্যের লেশমাত্র মিল নেই। তবুও আমি আমাকে কেন্দ্র করে এসব বিষয়ের অবতারণা হওয়ায় আমি মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছি ও বিব্রত হয়েছি। আশা করি যারা আমাকে দীর্ঘ সময় ধরে চেনেন জানেন তারা আমাকে কেন্দ্র করে অসত্য তথ্যে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।