ফরিদপুরের সালথায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এক নারীসহ অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মাঝারদিয়া গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা ও তার ছেলের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এলাকাবাসী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাঝারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. হাবিবুর রহমান ওরফে হামিদ মাতুব্বরের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক সহসভাপতি মো. শাহিদুজ্জামান ওরফে শাহিদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জেরে মাঝে মধ্যেই সংঘর্ষে লিপ্ত হন উভয় পক্ষের সমর্থকরা।
এ বিরোধের ধারাবাহিকতায় সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এর জেরে আওয়ামী লীগ নেতা মো. শাহিদুজ্জামানের সমর্থক স্থানীয় মাঝারদিয়ার দুই নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কবির মোল্লার নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান ও তার ছেলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সহসভাপতি ফারুক মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে অন্তত ১১ জন আহত হন।
আহতদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাবিবুর রহমানের সমর্থক রেনু বেগম (৫৮), রহমতুল্লাহ মাতুব্বর (৩২), বুরহান (২৪), বাসার মোল্লা (৫২), মমিন মোল্লা (৩৪), মাসুদ (১৮) ও শাহিদুজ্জামানের সমর্থক হানিফ মোল্লাকে (৪০) ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ফোন না ধরায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাবিবুর রহমানের বক্তব্য জানা যায়নি। তবে কথা হয় তার ছেলে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ফারুক মাতুব্বরের সঙ্গে।
ফারুক মাতুব্বর বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই সোমবার সকালে শাহিদুজ্জামানের পক্ষের ইউপি সদস্য কবির মোল্লা ও তার লোজকন আমাদের সমর্থক স্বপনকে মারধর করে। পরে আমাদের লোকজন ঠেকাতে গেলে তাদেরও মারধর করে। পরে কবির মোল্লার নেতৃত্বে এক থেকে দেড়শ লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে অন্তত ১০টি বসতঘরে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং ঘরে থাকা মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমাদের সাতজন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক সহসভাপতি শাহিদুজ্জামান শাহিদ বলেন, সংঘর্ষের সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। তবে শুনেছি, কবির মোল্লা ও হাবিবুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে কবির মোল্লা বলেন, সংঘর্ষ বা হামলার সঙ্গে আমি জড়িত না। পাট চুরি নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা আওয়ামী লীগ করি, আমরা কি এখন সংঘর্ষে জড়াতে পারি।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।