স্বপ্নের মতো সময় পার করছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ইরানের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব থেকেও পাচ্ছেন ইতিবাচক সাড়া। এরই মধ্যে মন্ত্রিসভায় নিজের পছন্দের লোকজনকে বসাতে পেরেছেন পেজেশকিয়ান। গেল দুই দশকের মধ্যে এটাই এ ধরনের প্রথম ঘটনা।
এমনকি প্রথমবারের মতো ইরান সরকারে নারী মুখপাত্রও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এবার দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে পেয়েছেন সবুজ সংকেত।
ক্ষমতায় আসার আগেই পেজেশকিয়ান ঘোষণা দিয়েছিলেন পশ্চিমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে চান তিনি। এবার তাকে সেই সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি। তিনি বলেছেন, পরমাণু ইস্যুতে ‘শত্রুদের’ সঙ্গে আলোচনায় বসতে নতুন সরকারের জন্য কোনো ‘বাধা’ নেই।
খামেনির এমন মন্তব্যকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে পশ্চিমা মিডিয়া। যদিও তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ওয়াশিংটনকে বিশ্বাস করা ঠিক হবে না।
ইরান ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কিছু বিশেষজ্ঞ ও পর্যবেক্ষকদের বিশ্বাস- এমন মন্তব্য করার জন্য যে সময় খামেনি বেছে নিয়েছেন, তা হয়তো নিষেধাজ্ঞা থেকে বাঁচার একটি কৌশল। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তারা ইরানি নেতৃত্বকে কথা নয়, বরং কাজ দিয়ে পরীক্ষা করে দেখবে। ইরান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন হয়নি। বরং আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থার সঙ্গে ইরানের অর্থপূর্ণ সহযোগিতা দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
বর্তমান বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে স্থগিত হয়ে যাওয়া পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে পারত ইরানের সরকার। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে নিজেদের পরমাণু কার্যক্রম পুরোদমে এগিয়ে নিয়েছে দেশটি।
গেল মাসে একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ফোরামে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছিলেন, পরমাণু অস্ত্র তৈরির একেবারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে ইরান। এ জন্য ইরানের এক বা দুই সপ্তাহ লাগতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছিলেন।
২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ছয় জাতির ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনেন। পরবর্তীতে ২০২১ ও ২০২২ সালে তেহরানের সঙ্গে পরোক্ষভাবে আলোচনা চালিয়ে গেছে বাইডেন প্রশাসন।
ইব্রাহিম রাইসির আকস্মিক মৃত্যুর পর, গেল জুলাইয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পান সংস্কারপন্থি পেজেশকিয়ান। তার জয়ে পশ্চিমারা ইরানের বিদেশ নীতি পরিবর্তন হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে উঠেছে। যদিও পরমাণু কর্মসূচিতে পশ্চিমাদের খুশি করে, এমন কোনো পদক্ষেপ এখনো পর্যন্ত নেননি পেজেশকিয়ান।