শিল্পাঞ্চল সাভার আশুলিয়ায় বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা মজুরি, হাজিরা বোনাস, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, নিয়োগসহ নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে গত কয়েকদিন ধরে। ফলে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় পোশাক খাতে এক ধরনের স্থবিরতা তৈরি হয়েছিল। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল বেশ কয়েকটি কারখানা।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) কয়েকটি কারখানা বাদে খুলে দেওয়া হয়েছে সব ক’টি কারখানা। অস্থিরতা কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে শিল্পাঞ্চল সাভার আশুলিয়ার কারখানাগুলো।
মঙ্গলবার সাকাল ৮টা থেকে সাভারের আশুলিয়ার শিমুলতলায় বন্ধ থাকা দি ড্রেস এন্ড দি আইডিয়াস পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে কারখানাটির মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেয়। একই এলাকায় অবস্থিত নাবা নিট কম্পোজিট লিমিটেড কারখানাটিও বন্ধ রয়েছে।
দ্য ড্রেস এন্ড দ্য আইডিয়াস কারখানার একাধিক শ্রমিক জানান, আজ সকাল ৮টার দিকে সড়কে টহলরত সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাদের সঙ্গে কথা বলেন।
সেনাবাহিনী সদস্যরা আমাদের অনুরোধ করেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয় এমন কর্মকাণ্ড করা থেকে বিরত থাকতে।
শ্রমিকরা জানান, দ্য ড্রেস এন্ড দ্য আইডিয়াস কারখানা কর্তৃপক্ষ গত শনিবার ৫ জন কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেন। পরদিন রোববার থেকে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সোমবার দিবাগত রাতে শ্রমিকরা জানতে পারেন ট্রাকে করে কারখানা থেকে যন্ত্রপাতিসহ মালামাল সরিয়ে ফেলছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। পরে ভোরে তারা কারখানার সামনে অবস্থান নেন। সকাল ৮টার দিকে সড়কে টহলরত সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং বিষয়টি নিয়ে কারখানা মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, সুপারভাইজার ও লাইনম্যানকে চাকরি থেকে বাদ দিয়ে রোববার সকালে মালিক কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। এখন বেতনের সময় হয়েছে, কারখানা বন্ধ থাকলে আমরা বেতন পাব কীভাবে। কোম্পানি যদি এখন আমাদের বেতন না দিয়ে কারখানা বন্ধ করে তাহলে দোকান বাকি এবং বাসা ভাড়ার জন্য আমাদের পথে বসতে হবে।
এর আগে আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশ কারখানায় কাজ শুরু করছেন শ্রমিকরা। কয়েকটি কারখানা বন্ধ রয়েছে। গিল্ডান বাংলাদেশ কারখানার নিরাপত্তা কর্মী মো. মিন্টু কালবেলাকে বলেন, আমাদের সব কারখানা অনর্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। গত কয়েকদিন শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করলেও আজ (মঙ্গলবার) কোন শ্রমিক আসেনি।
এদিকে গতকাল ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) মূল ফটকে মহাসড়ক অবরোধ করে চাকরি প্রত্যাশীরা আন্দোলন করলেও আজ তারাও আসেননি। ডিইপিজেডের ভেতরের কারখানাগুলোতে কার্যক্রম চলছে নির্বিঘ্নে। সড়কের পরিস্থিতিও রয়েছে স্বাভাবিক।
বেপজার নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) আনোয়ার পারভেজ বলেন, ডিইপিজেডের পুরাতন এবং সম্প্রসারিত জোনে মোট ৮৬ টি শিল্পকারখানা রয়েছে। সবগুলোতেই নির্বিঘ্নে কাজ চলছে।
শিল্পাঞ্চল পুলিশ- ১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার কালবেলাকে বলেন, সাভার ও আশুলিয়ায় আজকের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। শ্রমিকরা নির্দিষ্ট সময়ে কাজে যোগ দিয়েছেন। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। কয়েকটি কারখানা বন্ধ রয়েছে।