গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের খবরে ছাত্র আন্দোলনের মুখে দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। লুট করে নিয়ে যাওয়া হয় থানায় সংরক্ষিত বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ ।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা হয় কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ। তবে সে সংখ্যা খুবই নগণ্য। বহু অস্ত্র বাইরে রয়ে গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেসব অস্ত্র এবং আগে থেকে অনেকের কাছে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ অভিযান পরিচালনা করবে ।
নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির কাছে এ ধরনের অস্ত্র ও গোলাবারুদ রক্ষিত থাকলে মঙ্গলবারের (৩ সেপ্টেম্বর) মধ্যে কাছের থানায় জমা দিতে বলা হয়েছিল। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আগেই ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।
যৌথ অভিযান শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার পর (৪ সেপ্টেম্বর) থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার কার্যক্রমসহ নিয়মিত টহল ও নজরদারি অব্যাহত রাখতে ।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী অভিযান বিষয়ে মঙ্গলবার বলেন, দেশের বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে বুধবার থেকে যৌথ বাহিনীর অপারেশন শুরু হবে। একইসাথে ধরা হবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে মাদক চোরাচালান ও এরসাথে সম্পৃক্ত গডফাদারদেরও ।
জানা গেছে, যৌথ এই অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, কোস্টগার্ড এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা অংশ নেবেন। সব বাহিনী সমন্বয় করে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে। লক্ষ রাখা হবে কোনো অপরাধী যেন ছাড় না পায় সে বিষয়ে।
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কোনো অভিযান পরিচালনার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজেদের পরিচয় দিয়ে তবে গ্রেফতার করতে হবে। পরিচয় না দিয়ে কোনো অবস্থাতেই কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না।
স্থগিত করা লাইসেন্সের বিপরীতে থাকা অস্ত্র ও গোলাবারুদ থানায় জমা না দিলে উদ্ধার অভিযানে সেগুলো জব্দ করা হবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হবে পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেহাত হওয়া ও হারানো অস্ত্রসহ যেকোনো অবৈধ অস্ত্র এ অভিযানে ।
সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, পুলিশ, র্যাব ও আনসারের যৌথ সমন্বয়ে অপারেশন টিম গঠন করে অভিযান পরিচালনা করা হবে। মহানগর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করবেন পুলিশ কমিশনার। কমিশনার এ অভিযান পরিচালনা করবেন সব বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ।
স্থগিত করা লাইসেন্সের তালিকা পর্যালোচনার ভিত্তিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কোর কমিটির মাধ্যমে অভিযান পরিচালিত হবে। এই কমিটিতে পুলিশ সুপার, সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধি এবং অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন।
এছাড়া অবৈধ অস্ত্র সংরক্ষণ বা হেফাজতকারীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়েরসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি জেলা তথ্য অফিস প্রচার করবে।