জার্মানির সরকার ও প্রধান বিরোধী শিবির রাজনৈতিক আশ্রয় ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক বিষয়ে সংস্কারের লক্ষ্যে মঙ্গলবার প্রাথমিক আলোচনা চালিয়েছে। বিরোধীরা জার্মানিতে প্রবেশ আরও কঠিন করতে চায়।
জোলিঙেনের ঘটনার পর থেকে জার্মানির রাজনৈতিক জগতে রাজনৈতিক আশ্রয় ও নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
সেই সঙ্গে গত রোববার পূর্বের দুটি রাজ্যে নির্বাচনে মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলোর খারাপ ফলাফল অবৈধ অনুপ্রবেশ, আশ্রয়ের আবেদন নাকচ হওয়ার পর বিদেশিদের প্রত্যর্পণ, অপরাধ দমনে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদ আরও বেড়ে গেছে।
মঙ্গলবার জার্মানির জোট সরকারের তিন শরিক দল ও প্রধান বিরোধী ইউনিয়ন শিবিরের দুই দল প্রথমবারের মতো সে বিষয়ে আলোচনা করেছে।
গত সপ্তাহে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সরকার প্রস্তাবিত পদক্ষেপের এক খসড়া প্রকাশ করেছিল। তার ভিত্তিতেই মঙ্গলবার প্রাথমিক আলোচনা হলো। সরকার ও বিরোধী প্রতিনিধিরা সে বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য না করলেও এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। আগামী কয়েক দিনে আরও কয়েক দফা আলোচনা হওয়ার কথা।
জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার বলেন, প্রথম বৈঠকে দুই পক্ষের মধ্যে সুনির্দিষ্ট, খোলামেলা ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। এবার কয়েকটি বিষয়ের আইনি দিকগুলো পরীক্ষা করতে হবে। আপাতত আলোচনার বিষয়গুলো গোপনীয় রাখার সিদ্ধান্তের কথাও তিনি বলেন।
শলৎসের সরকার বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপের প্রস্তাব রেখেছে। বিরোধী ইউনিয়ন শিবির সেইসঙ্গে জার্মানিতে বিদেশিদের প্রবেশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমানোর ওপরও জোর দিচ্ছে। তাদের মতে, অভিবাসন ও সমাজের মূল স্রোতে বিদেশিদের সম্পৃক্ত করার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হলে কর্তৃপক্ষের ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করলে চলবে না।
সীমান্তে আরও কড়া নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সেখান থেকে বিদেশিদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থাও করতে হবে। সিডিইউ দলের শীর্ষ নেতা ফ্রিডরিশ ম্যারৎস বলেছেন, অনিয়ন্ত্রিত অভিবাসনই মূল ইস্যু। তবে জাতীয় ও ইউরোপীয় আইন লঙ্ঘন না করে বাস্তবে কতটা কড়া পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাধারণ বিধিনিয়ম নিয়ে জার্মানির রাজনৈতিক মহলে সংশয় বাড়ছে। বিশেষ করে ডাবলিন চুক্তি সত্ত্বেও অন্য দেশে নথিভুক্ত আশ্রয়প্রার্থীরাও জার্মানিতে থেকে গিয়ে যেভাবে প্রত্যর্পণ এড়াতে পারছে, সেই প্রেক্ষাপটে জাতীয় স্তরে আরও কড়া নিয়মের দাবি বাড়ছে।
মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের ক্ষোভের মুখে দলীয় রাজনীতির ঊর্দ্ধে উঠে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ অনুভব করছে। সাম্প্রতিক নির্বাচনে পপুলিস্ট দলগুলোর অভাবনীয় সাফল্য তাদের গভীর দুশ্চিন্তায় ফেলছে।