চীনের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে পলাতক থাকা ফিলিপাইনের সাব্কে নারী মেয়র অ্যালিস গুওকে ইন্দোনেশিয়ায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ গত জুলাই মাসে অ্যালিসের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পরে চারটি দেশে তাকে অনুসরণ করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে অনলাইন ক্যাসিনো পরিচালনায় সহায়তা এবং এর আড়ালে ফিলিপাইনের ব্যাম্বান শহরে মানবপাচার ও স্ক্যাম সিন্ডিকেট চালানোর অভিযোগ রয়েছে। তবে ব্যাম্বানের সাবেক মেয়র অ্যালিস গুও তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বুধবার বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব তাকে ফিলিপাইনে ফেরত আনা হবে।
অ্যালিস গুও বলেছিলেন, তিনি তার চীনা বাবা ও ফিলিপিনো মায়ের সাথে পারিবারিক খামারে বেড়ে উঠেছেন। তবে তার স্ক্যাম সেন্টারের কার্যক্রমের তদন্তকারী ফিলিপিনো এমপিরা বলেছেন, অ্যালিস গুওর আঙুলের ছাপের সাথে গুও হুয়া পিং নামের এক চীনা নাগরিকের ছাপের মিল পাওয়া গেছে। তদন্তে ব্যাম্বানের অপরাধী গ্যাংকে আড়ালকারী গুপ্তচর হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে অ্যালিসকে।
ফিলিপাইনের সাবেক এই মেয়রের মামলা নাটকীয় মোড় নেয় তার বোনকে গ্রেপ্তারের পর। পরে ফিলিপাইনের সিনেটে তার বোনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই ঘটনা দেশটিতে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
দক্ষিণ চীন সাগরে মালিকানা নিয়ে ফিলিপাইন ও চীনের চলমান বিবাদ মাঝে গুওর মামলাটি জটিল হয়ে উঠেছে। তবে অ্যালিসের বিরুদ্ধে ফিলিপাইনের তোলা অভিযোগের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি চীন।
ফিলিপিনো কর্তৃপক্ষ বলছে, গত জুলাইয়ে সীমান্তে তল্লাশি এড়িয়ে বেশ কয়েকটি নৌকা বদলিয়ে প্রতিবেশি মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর হয়ে ইন্দোনেশিয়ায় যান অ্যালিস গুও। মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী জাকার্তার পশ্চিম সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট মার্কোস বলেছেন, যারা ন্যায়বিচার এড়ানোর চেষ্টা করছেন, অ্যালিসের গ্রেপ্তার তাদের জন্য এক সতর্ক বার্তা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে প্রেসিডেন্ট মার্কোস বলেন, ‘‘পালিয়ে যাওয়ার এই ধরনের চর্চা একেবারে নিষ্ফল। আইনের হাত লম্বা এবং এটা আপনার কাছে পৌঁছাবে।’’
ছবিতে গ্রেপ্তারের সময় অ্যালিস গুওর পরনে হালকা গোলাপি পায়জামা ও সাদা কোট দেখা যায়।