পিলখানায় বিডিআর হত্যাকান্ডের পর শেখ হাসিনার কর্মকান্ড রহস্যজনক ছিল বলে জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। আজ রাজধানীর গুলশানের বিএনপির চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সাথে সাথে ২০০৯ সালে বিডিআর হত্যাকান্ড ঘটলেও এখনো ধোয়াশা রয়ে গেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে বিডিআর হত্যাকান্ড ছিল অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা। বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার উদ্দেশে এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল।
তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকান্ডের ঘটনায় নতুন করে বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। কমিশন গঠন করতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নতুন করে তদন্ত করার উদ্যোগ নেয়ায় তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
পিলখানা হত্যাকান্ড নিয়ে মেজর হাফিজ আরও বলেন, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর নৈতিক মনোবল ভেঙ্গে দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র পরিণত করতে এই হত্যাকান্ড সংঘঠিত করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বসহ অনেকেই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। বিডিআর প্রধান তৎকালীন মেজর জেনারেল শাকিল সেনাপ্রধানের কাছে সাহায্য চাইলেও তা করা হয়নি। বিদ্রোহের কথা শুনলে বিদ্রোহ দমন করা সেনাকর্মকর্তার দায়িত্ব। সেনাবাহিনী হত্যাকান্ডের পরপরই সাজোয়া যানসহ মিলিটারি অ্যাকশনে যাওয়ার কথা থাকলেও সেনাপ্রধান ৪৬ ব্রিগেড কমান্ডারকে তা করতে দেয়নি। সরকারপ্রধানের ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
সুবেদারকে বাহিনী প্রধান করার নজির পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও নেই উল্লেখ করে মেজর হাফিজ বলেন, সরকারপ্রধান ও সরকারি দলের যোগসাজসেই বিডিআর হত্যাকান্ড হয়েছিল। হত্যাকান্ডের পর কয়েকটি কমিশন করলেও সেগুলোর কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। সেনাবাহিনীর ইনকোয়ারির রিপোর্টটিও অন্ধকারে রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সরকার বিডিআর হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচারের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মঈনের কারো কাছ থেকে কোনো নির্দেশের প্রয়োজন ছিল না, তারপরও ব্যবস্থা নেননি। সেনাবাহিনীর মনোবল ধ্বংস করতে এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছিল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করলে সেখানে হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করায় ৫০ থেকে ৬০ জন অফিসারকে পরবর্তীতে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়। তাদের সেনাবাহিনীতে পুনর্বহাল করতে হবে। পুন:তদন্ত সঠিকভাবে করতে বিএনপি প্রয়োজনে সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ প্রতিবেশী দেশের আজ্ঞাবহ উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীকে দলীয়করণ এমনভাবে করেছে যে জেনারেলরা কথা বললে মনে হয়, যেন ছাত্রলীগের নেতারা বক্তব্য দিচ্ছেন। সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করার প্রাথমিক পদক্ষেপ বিডিআর হত্যাকান্ড। দেশের সার্বভৌমত্ব ধ্বংসে যেসব দল ভূমিকা নিয়েছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে বলেও দাবী করেন তিনি।