গণজাগরণের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সারা দেশে ডাকা ‘শহীদী মার্চ’ শেষ করে জাতীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জাতীয় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয় শহীদি মার্চের পদযাত্রা। যেখানে অংশ নেন লাখো ছাত্র-জনতা।
লাখো ছাত্র-জনতার অংশ নিয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।
তিনি বলেন, লক্ষাধিক ছাত্র-জনতার এই সমুদ্রস্রোত প্রমাণ করে- শহিদের রক্তে রঞ্জিত অভ্যুত্থান কখনো বৃথা যেতে পারে না ৷ সেই স্পিরিটকে ধরে রাখতে আবার জীবন দিতেও আমরা প্রস্তুত৷
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শহীদী মার্চ শুরু হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, কারিগরি, মাদ্রাসা ও স্কুলের শিক্ষার্থীসহ লাখো মানুষ অংশ নেন। মার্চ চলাকালে আশপাশের দোকানিরা হাত নাড়িয়ে তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘সফল হোক সফল হোক, শহীদী মার্চ সফল হোক’, ‘শহীদদের কারণে, ভয় করি না মরণে’, ‘শহীদের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’- এ ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
গতকাল (বুধবার) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। মার্চে শহীদদের স্মরণ করে ছবি, উক্তিসহ বিভিন্ন স্মারক নিয়ে ছাত্র-জনতাকে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা নিজ জায়গা থেকে শহীদী মার্চে অংশ নেবে।
এ ছাড়া ঢাকা মহানগরসহ দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শহীদী মার্চ পালনের কথা জানান। সরকার পতনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনের শহীদদের ছবি থাকতে পারে। যে কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন, সেসব কথা প্ল্যাকার্ডে থাকতে পারে। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কী চাই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছে কী চাই- এসবও থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এর মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগের টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিনদিন পর গত ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ শপথ নেয়।