বন্যায় লক্ষ্মীপুর জেলায় ৬৫৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ৬২টি, মাধ্যমিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও কলেজের ৮৪টি এবং প্রাথমিকের ৫১৩টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে। তবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ফোনে না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কত তা জানা যায়নি।
এছাড়া ২ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের চাঁদখালী বাজার এলাকার তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার জমিসহ ৩টি সেমিপাকা শ্রেণিকক্ষ, অফিস কক্ষ ও শৌচাগার ভেঙে রহমতখালী খালে তলিয়ে যায়। এ সময় নারিকেল গাছসহ বিভিন্ন জাতের ২০টি গাছও তলিয়ে গেছে। মাদ্রাসাটিতে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়টি ভেঙে খালের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
চাঁদখালী তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা মোসাদ্দেকুল হক বলেন, জমিসহ আমাদের প্রতিষ্ঠান খালের স্রোতে তলিয়ে গেছে। এতে আমাদের ২০-২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে। পাঠদান কর্মসূচি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক ইব্রাহিম খলিল বলেন, লক্ষ্মীপুরে ১৮৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৮৬টি আশ্রয়ণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। মাদ্রাসা ও কলেজ আমাদের অধীনে নয়। এজন্য কতটি মাদ্রাসা ও কতটি কলেজ আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে তা জানা নেই।
ইব্রাহিম খলিল আরও বলেন, লক্ষ্মীপুরে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৪৭টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বন্যায় ৬২টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া জেলায় ২১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে বন্যায় ৮৪টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান তাদের ক্ষতির চাহিদা প্রেরণ করেছে। তবে আমরা তা এখনো নির্ণয় করতে পারিনি।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল লতিফ মজুমদার বলেন, আমাদের ৭৩২টি বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে ২০৪টি আশ্রয়ণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। বন্যায় ৫১৩টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্রায় ৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। যেসব বিদ্যালয়ে আশ্রয়ণকেন্দ্র রয়েছে তম্মধ্যে সবগুলোতে পানি উঠেনি। আবার যেগুলো আশ্রয়ণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয়নি, সেগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন অধিকাংশ বিদ্যালয়ই বন্ধ। এর মধ্যে কোনোটি পানির কারণে বন্ধ, কোনোটি আশ্রয়ণকেন্দ্রের কারণে বন্ধ রয়েছে।