নাটোরের গুরুদাসপুরে জয়নব বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের হরদোমা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। নিহত জয়নব বেগম পার্শ্ববর্তী সিংড়া উপজেলার মহিষমারি গ্রামের মো. জয়নাল শেখের মেয়ে।
ঘটনার পর থেকেই নিহত জয়নব বেগমের স্বামী সাদ্দাম হোসেনসহ পরিবারের সবাই পলাতক রয়েছেন বলে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা জয়নাল শেখ বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় পাঁচজনের নামে হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় নিহত গৃহবধূর স্বামী সাদ্দাম হোসেন, দেবর, শ্বশুর, শাশুড়িসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দশ বছর আগে হরদোমা গ্রামের মো. আজাদের ছেলে সাদ্দামের সঙ্গে জয়নব বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের ১০ ুবছরেও তাদের ঘরে কোনো সন্তান নেই। বাড়িতে জয়নব বেগমের স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবরসহ পাঁচজন বসবাস করতেন। শনিবার সন্ধ্যায় স্বামী সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে গৃহবধূ জয়নব বেগমের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে স্বামীর ধাক্কায় মাটিতে পরে গিয়ে ঘটনাস্থলেই জয়নব বেগমের মৃত্যু হয়। এরপর শ্বশুরবাড়ির লোকজন মৃত গৃহবধূর মরদেহ বাড়িতে রেখে বাড়িতে থাকা টাকা, গরু-ছাগল নিয়ে পালিয়ে যায়। দীর্ঘ সময় মরদেহ বাড়িতেই পড়ে ছিল। বিকেলে প্রতিবেশীরা তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখেন গৃহবধূ জয়নবের মরদেহ মাটিতে পড়ে আছে। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন।
গৃহবধূ জয়নব বেগমের বাবা জয়নাল শেখ বলেন, আমার মেয়েকে তারা হত্যা করেছে। মেয়ের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে যারা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। তবে নিহত জয়নব বেগমের শ্বশুরবাড়ির লোকজন সেখানে ছিল না। সবাই পলাতক রয়েছে। নিহতের গলায় হাল্কা একটি দাগ বোঝা যাচ্ছে। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে আমাদের ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিহতের বাবা জয়নাল শেখ বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় স্বামীসহ মেয়ের শ্বশুরবাড়ির পাঁচজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।