বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপরে হামলার অভিযোগে গণপিটুনির শিকার হওয়া সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ মারা গেছেন।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগীরর বিনোদপুর বাজার এলাকায় মারধরের শিকার হন আব্দুল্লাহ আল মাসুদ।
নিহত আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার রফিকুল ইসলামের ছেলে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেল সেন্টারের স্টোর অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। সপরিবারে বিনোদপুরে বসবাস করতেন।
বোয়ালিয়া থানা পুলিশের ওসি মাসুদ পারভেজ কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহত মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিনোদপুরের বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় বিনোদপুর বাজারে পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা তাকে ঘিরে ফেলে। পরে তাকে গণপিটুনি দিয়ে প্রথমে মতিহার থানায় এবং পরবর্তীতে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মারা যান।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান ফিরোজ বলেন, রাতে মাসুদকে হাসপাতলের জরুরি বিভাগে আনা হয়। তার শরীরের কয়েক জায়গাতে জখম ছিল। তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। হাসপাতালে ভর্তি করার পর রাতে মারা যান।
ওসি মাসুদ পারভেজ বলেন, আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে বিনোদপুরে মারধর করা হয়েছিল। এরপর একদল শিক্ষার্থী তাকে প্রথমে মতিহার, পরে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যান। গুরুতর আহত দেখে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, নিহতের মরদেহ রামেক হাসপাতালে মর্গে রয়েছে। আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল সকালে ক্লাসে যাওয়ার পথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলের সামনে হামলার শিকার হন আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। দুর্বৃত্তদের হামলায় মাসুদের ডান পায়ের নিচের অংশ গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বাম পা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নির্দেশনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পেয়েছিলেন ছাত্রলীগের এই নেতা।