ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বাস্তুচ্যুতদের ক্যাম্পে আবারও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ৬০ জন।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোর হওয়ার আগ মুহূর্তে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকায় ‘নিরাপদ অঞ্চল’ বলে ঘোষিত বাস্তুচ্যুতদের একটি তাঁবু ক্যাম্পে এই হামলা চালায় ইসরায়েল।
গাজার সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরের আগে হওয়া এই হামলায় খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় অন্তত ২০টি তাঁবুতে হামলা চালানো হয়। এই এলাকায় বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের চাপ অনেক বেশি বেড়েছে।
স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে আল জাজিরা আরবি জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা বলেছেন, হামলার পর তারা তাঁবুর শিবিরে ৯ মিটার (৩০ ফুট) পর্যন্ত গভীর গর্ত খুঁজে পেয়েছেন। ভুক্তভোগী সবাইকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
গাজার সিভিল ডিফেন্সের এক মুখপাত্রের দাবি, ১১ মাস ধরে চলা যুদ্ধে এটি ইসরায়েলের সবচেয়ে বর্বর গণহত্যাগুলোর একটি। হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাচ্ছে না। এতে উদ্ধারকাজে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন সিভিল ডিফেন্স ক্রুরা।
এদিকে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, তারা ‘উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হামাস সন্ত্রাসীকে’ আঘাত করেছে, যারা খান ইউনিসের মানবিক অঞ্চলের ভেতরে একটি কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রে কাজ করছিলেন। হামলার আগে বেসামরিকদের ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
আল জাজিরা বলছে, মূলত ইসরায়েলি সেনাবাহিনী খান ইউনিস ও নিকটবর্তী রাফায় স্থল আক্রমণের সময় উপকূলীয় এই অঞ্চলটিকে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে আল-মাওয়াসির এই তাঁবু ক্যাম্পেই থাকতে বাধ্য হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এই হামলায় গাজার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি এই আক্রমণে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত ও ৯৪ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।