সিলেটের হজরত শাহপরান (র.) মাজারে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা মাজারে অবস্থানরত ভক্তদের মারধর ও বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করে। এতে শাহপরান মাজারে খাদেমসহ ৩০-৩৫ জন আহত হন।
সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ দিকে মাজারে হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শাহপরান এলাকাবাসী ও ছাত্র-জনতা মিলে ঘণ্টাব্যাপী মাজারের সড়কটি অবরুদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এলাকাবাসী জানান, সোমবার হামলার পর যাতে আর কোনো পক্ষ অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা না ঘটাতে পারে, সে লক্ষ্যেই আমরা অবস্থান নিয়েছি।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে শাহপরান (র.) মাজারে বার্ষিক ওরস শুরু হয়। এর আগে সিলেটের আলেমসমাজ শাহপরান মাজার ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে ওরসের নামে যাতে অসামাজিকতা না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করেন। সে অনুযায়ী প্রতিশ্রুতিও দেয় আয়োজক কমিটি। ওরস চলাকালীন তৃতীয় কোনো পক্ষ যাতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি না করতে পারে সেজন্য আলেম-সমাজের একটি প্রতিনিধি দল প্রথম দিন থেকেই মাজার এলাকায় অবস্থান করেন। তারা সার্বিক বিষয়ে নজরদারি রাখেন।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতেও তারা মাজারের মসজিদের সিঁড়িতে বসে কোরআন তিলাওয়াত ও গজল পরিবেশন করছিলেন। এ সময় ওরসে আসা মাথায় লাল কাপড় বাঁধা একদল লোক বিনা উসকানিতে তাদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে হামলার শিকার মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা মসজিদের ভেতরে আশ্রয় নেন। পরে হামলাকারীরা বাইরে অবস্থান নিয়ে তাদের হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন
খবর পেয়ে জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর এলাকার শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে মসজিদে আশ্রয় নেওয়া ছাত্র-শিক্ষককে উদ্ধার করেন এবং ওরসপন্থীদের ওপর চড়াও হন। ওরসে আসা লোকজনের তাঁবুগুলো ভেঙে দেওয়া হয়।
এ সময় দুপক্ষের মাঝে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে ভোররাতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, শাহপরানের ওরস চলাকালে মাজারভক্তরা হঠাৎ করে হামলা চালায়। এর জের ধরে স্থানীয়দের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। পরে পুলিশ-সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
শাহপরান থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, হামলার ঘটনায় পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কাউকে এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। তবে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।