পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফুজিমোরির মৃত্যু আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আরেকটি অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটিয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া সত্ত্বেও, তিনি দেশের একাংশের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন। সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বুধবার রাজধানী লিমায় নিজ বাড়িতে মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফুজিমোরি একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত পেরুকে শাসন করেছিলেন। তার শাসনামলে দেশটি অর্থনৈতিকভাবে কিছুটা উন্নতি লাভ করলেও, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসংখ্য অভিযোগের কারণে তিনি ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলেন।
মানবাধিকার লঙ্ঘন ও কারাদণ্ড: ফুজিমোরির বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ ছিল ১৯৯১ ও ১৯৯২ সালে ২৫ জন ব্যক্তিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়া। এই অপরাধের দায়ে তাকে ২০০৯ সালে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মানবাধিকার সংগঠনগুলো দাবি করে যে, ফুজিমোরির শাসনামলে তার বিরোধীদের নির্যাতন ও হত্যা করা হয়েছিল।
মানবিক বিবেচনায় মুক্তি: তবে ২০১৭ সালে মানবিক বিবেচনায় তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। তার স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ দেখিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সমর্থকদের শোক: ফুজিমোরির মৃত্যুতে তার সমর্থকরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তারা তার অর্থনৈতিক সাফল্য এবং দেশকে স্থিতিশীল করার জন্য তাকে স্মরণ করছেন। “এল চিনো মরতে পারে না!” এই স্লোগানটিই তার জনপ্রিয়তার পরিচয়।
বিপক্ষ পক্ষের প্রতিক্রিয়া: অন্যদিকে, ফুজিমোরির বিপক্ষপক্ষ তার মৃত্যুকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা তার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধের জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং তার মৃত্যুকে ন্যায়বিচারের জয় হিসেবে দেখছে।
পেরুর রাজনীতির উপর প্রভাব: ফুজিমোরির মৃত্যু পেরুর রাজনীতিতে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। তার অনুপস্থিতিতে পেরুর রাজনৈতিক দৃশ্যপটে নতুন নেতারা উঠে আসতে পারে এবং নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে।
মৃত্যুর পরও বিতর্ক: ফুজিমোরির মৃত্যুর পরও তার সম্পর্কে বিতর্ক চলমান থাকবে। তিনি একজন জটিল ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যিনি একই সাথে ভালো এবং খারাপ কাজ করেছেন। তার মৃত্যু পেরুর ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হবে।