দেশ সংস্কারে যত দেরি হবে, আস্থাহীনতা তত বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। তাই দেশের অস্থিরতা দূর করতে প্রয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারকে পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি।
মঞ্জু বলেন, মোটাদাগে এই সরকারের মূল প্রায়োরিটি গুম খুন হত্যার বিচার, স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা ও মৌলিক বিষয়ে সংস্কার ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজন করা। তবে গত এক মাসেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। মানুষ বের হতে ভয় পাচ্ছে এখনও।
তিনি আরও বলেন, জনপ্রশাসনে সংকট তৈরি হয়েছে। সচিবালয়ে গণ্ডগোল হচ্ছে, যার মূল কারণ পদায়নে অস্বচ্ছতা। আগের সরকারের বিতর্কিতদের পদায়ন করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। আলী ইমামের মতো বিতর্কিত লোককে এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসিয়ে মানুষের হতাশা বাড়ানো হয়েছে। আপনারা এমন সংস্কারে যত দেরি করবেন, এতে আস্থাহীনতা বাড়বে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও যানজটের কারণে মানুষ আস্থা হারাচ্ছে। এসব জায়গায় সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে।
এবি পার্টির এই নেতা প্রশ্ন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় চালু হতে পারলে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন চালু হচ্ছে না? এখানে প্রশাসনের গাফিলতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
অস্থিরতা দূর করতে অন্তবর্তী সরকারকে প্রয়োজনে পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে মঞ্জু বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের একতাবদ্ধ হতে হবে। সেনাবাহিনীর সমস্যাগুলো দূর করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে আরও ভূমিকা নিতে উদ্যোগ নিতে হবে। পুলিশকে একটিভ করতে হবে। প্রতিটা ক্ষেত্রে বিপ্লবের ছোঁয়া থাকতে হবে।
তিনি মনে করেন, এই সরকারের প্রতি মানুষের যেই প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে, সে ক্ষেত্রে প্রশাসনিক অস্থিরতা দ্রুত দূর করতে হবে। এর পেছনে কারও ইন্ধন থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হোক। কোন কাজে দীর্ঘসূত্রিতা যেন না হয়, এতে অনাস্থা সৃষ্টি হবে।
স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে উল্লেখ করে এবি পার্টির এই সদস্য সচিব বলেন, স্থানীয় সরকারের ক্ষেত্রে মানুষ সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদে মানুষের অনেক কাজ থাকে। দেশবাসীকে বলব ধৈর্য ধরতে। সংস্কার সবাইকে ব্যক্তিগতভাবেও করতে হবে।
উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারকে নিয়ে অনেক রকম আপত্তি রয়েছে দাবি করে মঞ্জু বলেন, উনি ওয়ান ইলিভেনের সময় বিতর্কিত। যেই দুইজন ছাত্র উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই এখন পর্যন্ত। তারা ভালো কাজ করছেন।
বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী এই গণ অভ্যুত্থান অবৈধ দাবি করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, যেহেতু সংবিধানে গণ অভ্যুত্থানের স্থান নেই। নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন আসার কথা। কিন্তু, তা হয়নি। তারা এর অপব্যবহার করেছেন। কাজেই সংবিধান সংস্কার করতে হবে। নতুন স্বাধীনতার পর নতুনভাবে সংবিধান সংস্কার করতে হবে।