ফেনীর পরশুরাম উপজেলার সুবার বাজারে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে একপক্ষকে না জানানোকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদলের অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের মধুগ্রাম ও সুবার বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলের দিকে ইউনিয়নের মধুগ্রামে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবিএম দাউদের সভাপতিত্বে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আবছারের তত্ত্বাবধানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও ফেনীর সন্তান রফিকুল আলম মজনুর ব্যানারে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদান করা হয়।
এ সময় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিম সরকারের কয়েকজন অনুসারী অনুষ্ঠানে হামলা চালায়। এতে ইউনিয়ন যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মধ্যে ইমন, আইয়ুব, রাব্বি, শাহাদাত, লিমনসহ ৫ জন আহত হন।
পরে সন্ধ্যায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুবার বাজারে দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে কথিত সেলিম সরকার গ্রুপের শাহীন, দিদার, আবুল হাশেম, রনি, আল আমিন, মোবারক, রাজন, সোহেলসহ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।
উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আবছার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফেনী-১ আসনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক রফিকুল আলম মজনুর পক্ষ থেকে আমার তত্ত্বাবধানে একটি ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানের বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সবাইকে আগেই অবগত করা হয়েছিল। তবুও অনুষ্ঠান চলাকালে হঠাৎ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিম সরকারের একদল অনুসারী এসে হামলা করে। তখন তারা অনুষ্ঠানস্থলে রফিকুল আলম মজনুর ব্যানার ছিঁড়ে, চেয়ার ভাংচুরসহ নেতাকর্মীদের পিটিয়ে আহত করেন। এতে আমাদের পক্ষের আরিফ, আইয়ুব, ইমন, শাহাদাতসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মধুগ্রাম থেকে এ ঘটনার সূত্রপাত হলেও পরবর্তীতে সন্ধ্যায় সুবার বাজারে তারা আবারও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। ঘটনার বিষয়ে শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছি। আমাদের শান্তিপূর্ণ আয়োজনকে বিতর্কিত করার জন্য ন্যাক্কারজনক এ হামলা চালানো হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে পরশুরাম উপজেলা বিএনপি সদস্য ও মির্জানগর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেলিম সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, যাদেরকে আমার অনুসারী বলে অভিযোগ করা হচ্ছে তারা এ হামলার ঘটনায় কোনোভাবেই জড়িত নয়। সেখানে মূলত ত্রাণ নিতে আসা লোকজন ত্রাণ না পেয়ে ঝামেলা করেছে। পরে আমার অনুসারীদের মধ্যে বাবুল মেম্বারের দুই ছেলে ও ভাতিজাকে বাজারে আসার পথে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শামীমের নেতৃত্বে বহিরাগতদের নিয়ে এসে সাপের মতো পিটিয়েছে। এখানে আমার অনুসারী বলে হামলার যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয়।
এ ব্যাপার পরশুরাম উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল হালিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাটি অবগত হয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকসহ কয়েকজনকে মীমাংসার করে দেওয়ার জন্য দায়িত্ব দিয়েছি। এ ঘটনায় দুপক্ষের আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে আমাদের লোকজন দেখতে গিয়েছিল। মূলত ওয়ার্ডে ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে একপক্ষকে না জানানোর কারণে মান-অভিমান থেকে এ ঘটনা ঘটেছে।
পরশুরাম মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুপক্ষের সংঘর্ষের বিষয়ে জেনেছি। তবে এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি।