বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, বাংলাদেশ আর ফ্যাসিজম চায় না। এই বাংলাদেশ ওই পলিটিক্যাল কালচার চায় না।
তিনি বলেন, ‘এই বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা এখন একটি নিউ পলিটিকাল সেটেলমেন্ট চায়। যারা কথা বলবে ছাত্রদের জন্য, যারা কথা বলবে সমতা, সমবন্টন ও সব মর্যাদার জন্য।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় সারজিস আলম এসব কথা বলেন।
এ সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মিতু আক্তার, রফিকুল ইসলাম, ইলিমা খন্দকার এ্যানি, অয়ন, সুবাসিরুল, রফিকুল হাসান বক্তব্য রাখেন।
ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা চাই আগামীতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবেন আপনারা। আরো চাই ওই সংসদে গিয়ে আপনি একজন এমপি ও মন্ত্রী হবেন। একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন। আপনাকে ওই সংসদে একজন পলিসি মেকার হিসেবে যেতে হবে। কারণ দিন শেষে আপনি কি খান, কি করেন, কি পড়েন, কিভাবে চলবেন, আপনার আইন কি, আপনার নিয়ম নীতি কি হবে, আপনার চলাফেরা কিভাবে হবে। তার সব ডিসিশন পলিসি মেকিং হয় ওই সংসদ থেকে।’
২০২৪ আন্দোলনে টাঙ্গাইলের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানেরএই স্পীড পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়–ক প্রত্যাশা করে ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, টাঙ্গাইলের মেধাবী তরুণ প্রজন্ম যদি ওই সংসদে প্রতিনিধিত্ব না করে তাহলে কারা করবে? সেই জায়গায় আজকের পর থেকে আপনাদের বাবা-মাকে বলে দিবেন আপনারা যেমন এতদিন স্বপ্ন দেখেছেন আপনার ছেলে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট, ম্যাজিস্ট্রেট হবে আজকের পর থেকে আপনারা স্বপ্ন দেখবেন আপনার ছেলে দেশের অন্যতম সেরা একজন রাজনীতিবিদ হয়ে উঠবে। একটা জিনিস মনে রাখবেন রাজনীতিবিদ হতে হবে পলিসি মেকিংয়ের জন্য। অথবা রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয়ে উঠতে হবে। যদি আপনি এটা না হন ওই দুইটার কোন একটি জায়গায় আপনাকে দেখা না যায়। তাহলে আপনার চেয়ে তুলনামূলক অযোগ্য মানুষদের দ্বারা আপনাদেরকে শাসিত এবং শোষিত হতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা আপনাদেরকে স্পষ্ট করে বলি, আপনারা রাজনীতিতে আসবেন। কিন্তু তার পূর্বে যোগ্য রাজনীতিবিদ হয়ে উঠবেন, যেন কেউ আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, দক্ষতা, ভাষা থেকে শুরু করে কোন কিছু নিয়ে একটি কথা কখনো না বলতে পারে।
সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের আজকে এই টাঙ্গাইলে এসে শুনতে হয়, আমার ভাই মারুফকে যে হত্যা করেছে, আমার যে বোনকে অপদস্ত করা হয়েছে, আমার যে ভাইকে রক্তাক্ত করা হয়েছে, আমার স্কুল-কলেজের ছোট ভাই-বোনদেরকে বিভিন্নভাবে হামলা ও রক্তাক্ত করা হয়েছে। সেই পুলিশ নাকি এখনো আশেপাশে ঘুরাফেরা করে। আমার ভাই যখন রক্তাক্ত হয়ে হাসপাতালে, তখন সেই হামলাকারী কতিপয় পুলিশ কিভাবে উন্মুক্ত রাস্তায় ঘোরাফেরা করে। আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই ওই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর, চাটুকার তেলবাজ, তোষামোদকারী যে সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য রয়েছে। তারা যদি এখনো নিজেকে শুধরে না নেয়। তাদের ওই নেত্রী হাসিনার মতোই তাদেরকে দেশত্যাগ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা আপনাদের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার মাধ্যমে পুরো বাংলাদেশকে আমাদের রায় হিসেবে জানিয়ে দিতে চাই। এক ফ্যাসিস্টকে আমরা দেশছাড়া করেছি। অন্য ফ্যাসিস্টকে জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য নয়। কেউ যদি এখনো শয়নে-স্বপনে, স্মৃতিতে কিংবা ঘুমের মধ্যে চিন্তা করে আবারও ছাত্র জনতাকে ডোমিনেট করে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠবে। তারা যেন ওই শেখ হাসিনাকে দেখে শিক্ষা নেয়।