বিজ্ঞানীরা কার্বন ফাইবার দিয়ে তৈরি করেছেন অত্যন্ত শক্তিশালী ও হালকা একটি ব্যাটারি যা বিদ্যুৎচালিত বিমানকে আরও দূর ও দ্রুত উড়তে সক্ষম করবে। সুইডেনের চালমারস ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির গবেষকদের এই আবিষ্কার বিশ্বব্যাপী বিদ্যুৎচালিত পরিবহনের ক্ষেত্রে নতুন এক যুগের সূচনা করতে পারে।
কার্বন ফাইবারের এই নতুন ব্যাটারির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল এর অসাধারণ শক্তি ও হালকা ওজন। এই ব্যাটারিকে যানবাহনের কাঠামোতে সহজেই সংযুক্ত করা যায়, ফলে যানের মোট ওজন অনেক কমে যায়। কম ওজনের কারণে বিদ্যুৎচালিত বিমান আরও দ্রুত গতিতে উড়তে পারবে এবং দূরত্বও বৃদ্ধি পাবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আবিষ্কার বিদ্যুৎচালিত পরিবহনের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। কার্বন ফাইবারের এই নতুন ব্যাটারি ব্যবহার করে বিমান ছাড়াও অন্যান্য যানবাহনকে আরও দক্ষ ও পরিবেশবান্ধব করা সম্ভব হবে।
চালমার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী রিচা চৌধুরীর নেতৃত্বে গবেষকরা একটি বিস্ময়কর অর্জন করেছেন। তারা সফলভাবে কার্বন ফাইবার ব্যবহার করে এমন একটি ব্যাটারি তৈরি করেছেন, যা অ্যালুমিনিয়ামের মতোই শক্তিশালী এবং বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে বৈদ্যুতিক ঘনত্ব সম্পন্ন।
এই নতুন ব্যাটারির ডিজাইনটি এর অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ল্যাপটপের ওজন প্রায় অর্ধেক করে ফেলার পাশাপাশি, মোবাইল ফোনকে ক্রেডিট কার্ডের মতো পাতলা করা সম্ভব হবে এই প্রযুক্তির সাহায্যে।
গবেষকরা কার্বন ফাইবার ব্যবহার করে এমন একটি ব্যাটারি তৈরি করেছেন যা বিদ্যুৎ গাড়ির চলার দূরত্ব অনেক বৃদ্ধি করতে পারে। এই নতুন ব্যাটারিটি লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির চেয়ে অনেক হালকা এবং কম জায়গা নেয়।
এই নতুন কার্বন ফাইবার ব্যাটারি বিদ্যুৎ গাড়ির বিদ্যুৎ সক্ষমতাকে প্রায় ৭০% পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। এর মানে হল, একবার চার্জে গাড়ি অনেক বেশি দূরত্ব পর্যন্ত চলতে পারবে।
লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির তুলনায় এই ব্যাটারিটি অনেক হালকা। ফলে, গাড়ির ওজন কমবে এবং এটি আরও দ্রুত গতিবেগ অর্জন করতে পারবে। পাশাপাশি, এই ব্যাটারিটি অনেক কম জায়গা দখল করে, যার ফলে গাড়ির ডিজাইনে আরও বেশি স্বাধীনতা থাকবে।
এই ব্যাটারির বৈদ্যুতিক ঘনত্ব লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির চেয়ে কম হলেও, এর আকার এবং ওজন কম হওয়ায় গাড়িতে এটি ব্যবহার করলেও সমান বা তার চেয়ে বেশি শক্তি পাওয়া যাবে।
এই নতুন ব্যাটারি প্রযুক্তি বিদ্যুৎ গাড়ির দুনিয়ায় এক বিপ্লব ঘটাবে। এটি বিদ্যুৎ গাড়িকে আরও সাশ্রয়ী এবং দক্ষ করে তুলবে।