ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) শতভাগ আবাসিকীকরণ অর্থাৎ হলগুলোতে সব শিক্ষার্থীরই সিট নিশ্চিতের দাবিতে মৌন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে (ভিসি চত্বর) বৃষ্টি উপেক্ষা করে এ কর্মসূচি পালন করেন একদল নারী শিক্ষার্থী।
কর্মসূচির একপর্যায়ে আলোচনার জন্য তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনস্থ আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ডাকা হয় এবং প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মতবিনিময় করেন।
এসময় তাদের হাতে ‘অধিকার শোকে পাথর আমরা, আর কোনো আশ্বাস চাই না’; ‘ভিসি স্যার আপনার বাসায় কী সাবলেট হবে?’; ‘ভিসি স্যার গেইট খুলেন’- ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া পূজা বিশ্বাস নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, একজন শিক্ষার্থী কতটা অসহায় হলে, মাথা গোঁজার একটু ঠাঁইয়ের জন্য তাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৃষ্টিতে ভিজে ভিসির বাসভবনের সামনে অপেক্ষা করতে হয়? বিশেষ করে, একজন মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে, যার বাবা-মা নিজেদের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং সঞ্চয় ঢেলে তাকে উচ্চশিক্ষার স্বপ্নপূরণের জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছে, তার জন্য এমন দুর্বিষহ পরিস্থিতি কতটা মর্মান্তিক হতে পারে? দেশের এই দুর্যোগপূর্ণ বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে যারা এই অসহায় মেয়েগুলের পাশে এসে দাঁড়াতে পারেনি, তাদের জন্যও লড়াই করে যাচ্ছে এরা, যাতে আর কাউকে এরকম অসহায় পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়!
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়ে কেন ঢাকায় বাসায় বাসায় ঘুরে সাবলেট খুঁজব? হয় আমাদের হলে সিট দিতে হবে নয়তো থাকার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থী এসেই যখন জনবহুল ঢাকা শহরে থাকার জায়গার সংকটে পরে তখনই তার ঢাবি নিয়ে আশা শেষ হয়ে যায়। একজন মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত মেয়ে কীভাবে বাইরে থাকার ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা জোগাড় করে, এ নিয়ে প্রশাসন কি কখনো ভেবেছেন? ৩য়, ৪র্থ বর্ষে পড়া অনেক মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয় সিট দিতে পারে না। বাধ্য হয়ে তারা বাইরে বিপুল টাকা ব্যয়ে বাসা নিয়ে থাকে। এমনকি ঢাবির কর্মচারীদের কোয়ার্টারেও উচ্চমূল্যে ভাড়া নিয়ে থাকতে হয়। একজন হলে থাকা শিক্ষার্থী তার মেধা-মনন বিকাশের যে সুযোগ পায়, একজন অনাবাসিক শিক্ষার্থী কী সেই সুযোগ পায়?