রীতিমতো দানবীয় শক্তি দেখাল ইয়েমেনের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী-হুথি। ইয়েমেন থেকে দুই হাজার কিলোমিটার দূরের ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তারা। মাত্র ১১ মিনিটে বিশাল এই পথ পাড়ি দেয় ক্ষেপণাস্ত্রাটি। যাত্রা পথে যা ফাঁকি বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে তৈরি ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা— আইরন ডোমকেও।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ও দারিদ্র-পীড়িত একটি দেশের সশস্ত্র গোষ্ঠীর এমন সক্ষমতা রীতিমতো অবাক করে নেতানিয়াহু প্রশাসনকে। তবে, স্বভাবসূলভ উপায়ে পাল্টা হামলার হুমকি দিয়ে রেখেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েলকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে, ইরানের এমন অক্ষশক্তিগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ফ্রন্টে আমরা যুদ্ধ করছি। সকালে হুথিরা ইয়েমেন থেকে আমাদের ভূখণ্ডে একটি সারফেস-টু-সারফেস ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। তাদের এত দিনে বুঝে নেওয়া উচিত ছিল যে, আমাদের ক্ষতি করার যেকোনো প্রচেষ্টার জন্য আমরা চড়া মূল্য আদায় করি।’
এই হামলার বিষয়ে ইয়েমেনের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নতুন হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলের রাজধানীর কাছে চালানো হয়েছে এই হামলা। ক্ষেপণাস্ত্রটি সফলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে দাবি করে তিনি বলেন, ইসরায়েল আয়রন ডোম ও অ্যারো ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করেও ধ্বংস করতে পারেনি ক্ষেপণাস্ত্রটি।
মুখপাত্র জেনারেল সারি আরও বলেন, ইয়েমেন থেকে ২ হাজার ৪০ কিলোমিটার দূরে এই ক্ষেপণাস্ত্র মাত্র সাড়ে ১১ মিনিটে পৌঁছে যায়। এতে ইসরায়েলিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে ভীতি ও আতঙ্ক। সাইরেনের শব্দে হুড়োহুড়ি করে অন্তত ২০ লাখ ইসরায়েলি আশ্রয় নেন বিভিন্ন কেন্দ্রে। ইসরায়েলের ইতিহাস এই প্রথম একসাথে এতো মানুষ মিসাইল হামলা থেকে বাঁচতে আশ্রয় কেন্দ্রে ছোটে।
গাজার জনগণের প্রতি ধর্মীয়, নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব থেকে সংহতি প্রকাশের জন্য ইয়েমেনিরা ইহুদিবাদীদের বিরুদ্ধে লড়ছে বলেও উল্লেখ করেন জেনারেল সারি। আগামী দিনগুলোয় তেল আবিবকে এ ধরনের আরও হামলার মুখোমুখি হতে হবে বলেও আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখেন তিনি।
উল্লেখ্য, ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে হুথি বিদ্রোহীদের। মূলত তাদের সরবরাহ করা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েই হামলা চালানো হয়েছে। তবে, গোষ্ঠীটিকে কোনো ধরনের সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে আসছে তেহরান।