বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রদান করবে। তবে এই অর্থ পাওয়ার জন্য বাংলাদেশকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত মেনে নিতে হবে। বিশ্বব্যাংক চায় বাংলাদেশ যাতে এই অর্থ দিয়ে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতকে আরও শক্তিশালী করে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও কার্যকর করার জন্যও কিছু নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে।
গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সাথে বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা এই শর্তগুলো তুলে ধরেন।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে এই ঋণ পাওয়ার জন্য বাংলাদেশকে কিছু শর্ত মানতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঋণের ৭৫ কোটি ডলার ব্যয় করতে হবে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সংস্কারে। এই সংস্কারের অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য একটি নতুন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ফরেনসিক নিরীক্ষার কার্যপরিধি নির্ধারণ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে আইন প্রয়োগের জন্য একটি পৃথক বিভাগ গঠন করতে হবে।
বাকি ২৫ কোটি ডলার ব্যবহার করা হবে দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে এবং বিভিন্ন প্রকল্পে গ্যারান্টি দেওয়ার জন্য।
বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, আগামী ডিসেম্বরে তারা এই ঋণ পেয়ে যাবে। এই ঋণ পাওয়ার ফলে দেশের ব্যাংকিং খাত আরও শক্তিশালী হবে এবং অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশকে ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। গতকাল এডিবির একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করে।
এই বিপুল পরিমাণ ঋণ পাওয়ার জন্য বাংলাদেশকে কিছু শর্ত মানতে হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করতে হবে। এছাড়া, বেসরকারি খাতে ঋণ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি গঠন এবং একটি নতুন টাস্কফোর্সের অধীনে ফরেনসিক নিরীক্ষা চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে এই শর্তাবলীর ৫০% পূরণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বাকি শর্তাবলী পূরণের জন্যও তারা কাজ করছে।
এই ঋণের একটি অংশ এসএমই খাতে ঋণ দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হবে। এছাড়া, অর্থনীতির অন্যান্য খাতের উন্নয়নেও এই ঋণ ব্যবহার করা হবে।
এডিবির এই ঋণ বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সুযোগ। এই ঋণের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার অর্থনীতির উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারবে। তবে, ঋণের শর্তাবলী পূরণ করা এবং ঋণের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা বাংলাদেশ সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
এডিবির ঋণ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এই ঋণের সুযোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশ তার উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে।