বরগুনার পাথরঘাটায় খালের পাড় থেকে ৮ ফুট লম্বা একটি অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে পাথরঘাটা বন বিভাগের সদস্যরা সাপটি উদ্ধার করেন। পরে তা অবমুক্ত করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কলেজের পেছনে খান বাড়ির মেয়ে সালমা আক্তার প্রথমে জালে পেঁচানো অবস্থায় সাপটি দেখতে পান। তিনি স্থানীয়দের বিষয়টি জানালে তারা বন বনবিভাগের লোকজনকে খবর দেয়। পরে সাপটিকে উদ্ধার করা হয়।
সালমা আক্তার বলেন, আমি আমার রুম থেকে পাশের ঘরে যাওয়ার সময় হঠাৎ সাপের ফোঁস ফোঁস শব্দ শোনতে পাই। পরে জালে পেঁচানো অবস্থায় সাপটি দেখতে পাই।
পরিবেশ কর্মী শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, আমার বাসার পেছন থেকেই সাপটি উদ্ধার হয়। অনেকে অজগরটিকে মারতে চেয়েছিল আমি তাদের নিষেধ করে বন বিভাগকে খবর দেই। তারা এসে সাপটি উদ্ধার করেছে।
বন বিভাগের উদ্ধারকর্মী বোটম্যান চিন্ময় মজুমদার বলেন, এটি অজগর সাপ। সাপটি উদ্ধার করে এরই মধ্যে পাশের বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, অজগর নির্বিষ সাপ। এটি নিশাচর ও খুবই অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া নড়াচড়াও করে না। এই প্রজাতিটি গাছে একাকী বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়া বাঁধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে এদের প্রজননকাল। দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযুক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়। সাপটি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাদ্য হিসেবে এরা ইঁদুর, কচ্ছপের ডিম, সাপ, বন মুরগি, পাখি, ছোট বন্যপ্রাণী ইত্যাদি খায়। সাপটি নিজের আকারের চেয়েও অনেক বড় প্রাণী খুব সহজেই গিলে খেতে পারে।
জোহরা মিলা বলেন, চামড়ার জন্য সাপটি পাচারকারীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ফলে আমাদের বনাঞ্চল থেকে এটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল-২ অনুযায়ী এ বন্যপ্রাণীটি সংরক্ষিত, তাই এটি হত্যা বা এর যে কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।