ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি ফেরাতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক শান্তি পরিকল্পনা উল্লেখ করেছেন। আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়ে তিনি সেই পরিকল্পনা উন্মোচন করতে পারেন।
আর আগামী নভেম্বরেই শান্তি সম্মেলন চান তিনি।
রাশিয়ার লাগাতার হামলার মুখেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, দেশে শান্তি ফেরানোর রূপরেখা প্রস্তুত হয়ে গেছে। এমনকি সংকট চলার সময় ‘ফ্রোজেন কনফ্লিক্ট’-এর বদলে স্থায়ী শান্তির পরিকল্পনাও নাকি প্রস্তুত।
আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার আগে তিনি এই মন্তব্য করলেন। এর আগে গত মাসেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে সেই পরিকল্পনা পেশ করার অঙ্গীকার করেছিলেন জেলেনস্কি।
উল্লেখ্য, সুইজারল্যান্ডে শান্তি সম্মেলনে ইউক্রেন রাশিয়ার সৈন্যদের নিজস্ব ভূখণ্ড থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার এবং হামলা চালানোর জন্য রাশিয়ার জবাবদিহিতার শর্ত আরোপ করেছিল। চলতি বছরেই রাশিয়ার অংশগ্রহণসহ আরও এক শান্তি সম্মেলন আয়োজনের চেষ্টা চলছে। জেলেনস্কি নভেম্বর মাসেই এমন সম্মেলনের পূর্বাভাস দিয়েছেন।
প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এখনও কিছু জানাননি। তবে তার দেশ প্রায় আড়াই বছরের যুদ্ধ অবসানের কোন কোন পূর্বশর্ত মেনে নিতে প্রস্তুত, সেই পরিকল্পনা তা ইঙ্গিত করবে।
বুধবার রাতে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া দৈনিক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, অনেক আলাপ আলোচনার পর বিস্তারিত এই রূপরেখা প্রস্তুত হয়ে গেছে। তার মতে, সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রত্যয়ই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
জেলেনস্কির মতে, ইউক্রেন তথা গোটা ইউরোপের জন্য নির্ভরযোগ্য ও স্থায়ী শান্তির কোনও বিকল্প থাকতে পারে না।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি জেলেনস্কি বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিসের সঙ্গেও তার বৈঠক করার কথা রয়েছে।
রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও তার সাক্ষাৎ হবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আগামী নভেম্বর মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর নতুন মার্কিন প্রশাসন ইউক্রেনের প্রতি কী মনোভাব দেখাবে, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে।
জেলেনস্কির শান্তি পরিকল্পনা সম্পর্কে রাশিয়ার মনোভাব কী হবে, সে বিষয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। নীতিগতভাবে শান্তির প্রস্তাবে সায় দিলেও ইউক্রেন রাশিয়ার ভূখণ্ডে কুরস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ দখল করার পর মস্কো আলোচনা সম্পর্কে অনীহা দেখাচ্ছে।
ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহারের সম্ভাবনাও রাশিয়া বার বার উড়িয়ে দিয়েছে। ট্রাম্প আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হলে ইউক্রেনের অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পড়বে বলে আশা করছে রুশ নেতৃত্ব।
এমন প্রেক্ষাপটে রাশিয়া শান্তির বিষয়ে কতটা আগ্রহ দেখাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।