ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৩০-৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী মো. তাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় এ মামলা করেন।
তাজিম দাগনভূঞা উপজেলা পূর্ব চন্দ্রপুর গ্রামের বাহার উদ্দিনের ছেলে। তিনি ফেনী আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদরাসার শিক্ষার্থী।
এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট সকাল থেকে ফেনীর মহিপাল ফ্লাইওভারের নিচে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলছিল। এতে তাজিম তার আরও কয়েকজন বন্ধুসহ অংশ নেন। ওইদিন দুপুরের দিকে আওয়ামী লীগের একদল সশস্ত্র নেতাকর্মী আগ্নেয়াস্ত্র সজ্জিত হয়ে ছাত্র-জনতার সমাবেশে হামলা করে। এতে নয়জন নিহত ও শতাধিক আহত হন। তাজিম নিজেও গুলিতে আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে হামলাকারীরা তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারা গেছেন মনে করে ফেলে চলে যায়। বিকেলে তার বন্ধুরা উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখনো তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ মামলার উল্লিখিত ৯ নম্বর আসামি জিয়া উদ্দিন ওরফে ডালিমকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী। ডালিম ফেনী সদর উপজেলার দক্ষিণ কাজিরবাগ গ্রামের বাসিন্দা। তিনি এলাকায় একজন বিএনপির কর্মী হিসেবে পরিচিত। এছাড়া তিনি বিএনপির দলীয় সাবেক সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানুর ছোট ভাই। তবে তিনি ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। গতকাল তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপালে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ অবস্থানে নির্বিচারে গুলি করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জন নিহত এবং দেড় শতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে। এর আগে ফেনী মডেল থানায় সেদিনের হত্যাকাণ্ডে ৮টি পৃথক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।