শরীয়তপুরের জাজিরায় বৃদ্ধ বাবাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ছেলে ফারুক মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার ডুবিসায়বর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় হানিফা মোল্লার স্ত্রী গোলাপ জান বিবি বাদী হয়ে ফারুক মোল্লাকে আসামি করে জাজিরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কাজিরহাট ডুবিসায়বর এলাকার বাসিন্দা ফারুক মোল্লা (৪০) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার বাবা হানিফা মোল্লা ও মা গোলাপ জান বিবি বেগমের কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাবা হানিফা, মা গোলাপ জান বিবি ও বোন পারুলকে গাছের মোটা গুড়ালি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে আহতাবস্থায় তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। কর্তব্যরত চিকিৎসক হানিফা মোল্লা ও গোলাপি বেগমের শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে শুক্রবার ভোর ৩টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় হানিফা মোল্লার মৃত্যু হয়।
নিহতের ভাগনী আলেয়া বেগম কালবেলাকে বলেন, ফারুক আমার মামাতো ভাই। দীর্ঘদিন প্রবাসে (মালয়েশিয়া) ছিলেন। সেখানেই বিয়ে করে। পরে অসুস্থতার কারণে দেশে আসে। দেশে আসার পর কোন কাজকর্ম না করে বসে বসে দিন পার করা শুরু করে। আর কোন টাকা পয়সার প্রয়োজন হলে আমার মামা হানিফা মোল্লা ও মামী গোলাপী বেগমের কাছে টাকা চাই তো। কিন্তু আমার মামা তেমন বৃত্তবান না হওয়ায় সবসময় ছেলের চাহিদামত টাকা দিতে পারতো না। এ কারণে বিভিন্ন সময় ঘরের মধ্যে ভাঙচুর ও মামা মামীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করত।
তিনি বলেন, সর্বশেষ মামার কাছে ২০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন। তা দিতে না পারায় ঘরের মধ্যে থাকা আসবাবপত্র ভাঙচুর শুরু করলে ছেলেকে বাধা দেয় মামা। তখনই গাছের একটি বড় গুড়ালি দিয়ে মামার মাথা ও শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করে ফারুক। এ সময় মামী গোলাপি বেগম ও মামাতো বোন পারুল বাধা দিতে যাওয়ায় তাদেরকেও বেধড়কভাবে পিটুনি দেয়। এতে তারা তিনজনই গুরুতর আহত হয়। পরে জাজিরা হাসপাতালে নিলে অবস্থা গুরুতর দেখে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেয়। ঢাকায় যাওয়ার পরের দিন আমার মামা মারা যান। মামী গোলাপি বেগমের অবস্থাও তেমন ভালোনা।
জাজিরা থানার ওসি আল-আমিন কালবেলাকে বলেন, বাবার কাছে ২০ হাজার টাকা চেয়ে না পাওয়ায় ফারুক মোল্লা তার বাবা-মা ও বোনকে পিটিয়ে আহত করেছেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার বাবা হানিফা মোল্লার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ফারুক মোল্লার মা গোলাপ জান বিবি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের সঙ্গে সঙ্গে অভিযান চালিয়ে তার নিজ বাড়ি থেকে ফারুক মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।