বিশ্ব নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কন্যা ফাতেমা তুজ-জোহরা (রা.) ও হজরত আলি-ইবনে-আবু তালিরের (রা.) কন্যা সাঈদা জয়নব বিনতে আলির (রা.) মসজিদ ও মাজার খুলে দিয়েছে মিসর। ব্যাপক সংস্কারের পর এটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে।
সাঈদা জয়নব বিনতে আলির (রা.)-এর নামের এ মসজিদের এলাকাটি ইল-সাইদা জয়নব নামে পরিচিত। মিসরের আদিম রাজধানী ফুস্তাত নগরী ও বর্তমান রাজধানী কায়রোর অন্যতম ব্যস্ততম এলাকায় এটির অবস্থান। হজরত জয়নব (রা.)-এর নামানুসারে এ এলাকাটির নামকরণ করা হয়েছে।
প্রসিদ্ধ এ এলাকায় রয়েছে সাঈদা জয়নব (রা.) মসজিদ ও মাজার। এটি মিসরের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ, যা হজরত হাসান ও হোসেনের (রা.) বোন সাঈদা জয়নাব (রা.)-এর কবরের ওপরে নির্মাণ করা হয়েছে।
ইতিহাসবিদদের মতে, কারবালা যুদ্ধের কয়েক মাস পর মিসরে জয়নব (রা.)-কে নির্বাসিত করা হয়েছিল। এ সময় তিনি মিসর পৌঁছালে তৎকালীন গভর্নরের নেতৃত্বে মিসরীরা তাকে রাস্তায় স্বাগত জানান।
এ সময় তিনি يا اهل مصر اعنتمونا أعانكم الله السيدة زينب رضى الله عنها বলে মিসরবাসীর জন্য দোয়া করেন। যার অর্থ হে মিসরবাসী, আপনারা আমাকে সমর্থন করেছেন, আল্লাহ আপনাদের সমর্থন করুন। আপনারা আমাকে আশ্রয় দিয়েছেন, আল্লাহ আপনাদের আশ্রয় দিন। আপনারা আমাকে সাহায্য করেছেন, আল্লাহ আপনাদের সাহায্য করুন, সমস্ত অসুবিধা থেকে মুক্তি এবং সমস্ত চিন্তা থেকে মুক্তির পথ তৈরি করে দিন।’
ইতিহাস থেকে জানা যায়, নির্বাসনের পর ৯ মাস মিসরে বসবাস করেন তিনি। এরপর এলাকাটিতে তার মৃত্যু হলে সেখানে দাফন করা হয়। পরবর্তীতে সেখানে মসজিন নির্মাণ করা হয়। এরপর ১৫৪৭ সালে মসজিদটি অটোম্যান শাসনামলে মোহাম্মদ আলি পাশা মসজিদটি প্রথমবারের মতো সংস্কার করেন।
পরে ১৭৬৮ সালে আবদুল রহমান এ মসজিদের সংস্কার করেন। এরপর ১৯৮০ সালে পুরোনো মসজিদ ভেঙে সেখানে বর্তমান মসজিদ নির্মাণ করা হয়। এ সময় থেকে এটি ইসলামি ইতিহাসের নিদর্শন হিসাবে নিবন্ধিত হয়।
করোনা মহামারীর সময়ে এ মসজিদটি আবারও বন্ধ রাখা হয়। এরপর এটির ব্যাপক সংস্কার করা হয়। বর্তমানে এ মসজিদ ও মাজার সংস্কার করে খুলে দিয়েছে মিসর সরকার।