ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সে দেশে ইলিশ মাছ রপ্তানি কেনো হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ভারত তো আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব চায় না।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক অনুষ্ঠানে এই প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, যে সময়ে আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) ইলিশ মাছ রপ্তানির কথা বলছেন, রপ্তানি হতেই পারে কিন্তু যখন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (অমিত শাহ) বলেন, বাংলাদেশি কাউকে সীমান্তে পেলে তার পা ঝুলিয়ে রাখো তখন আমি কেনো বলব না যে, আমরা ইলিশ মাছ দিব না।
যাদেরকে আমরা নানাভাবে শ্রদ্ধা করি, যাদের ধর্মীয় উৎসবের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ভারতে ইলিশ মাছ যায়। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য এটা তো সবসময়ই হয়ে এসেছে, সেটা যেতেই পারে। কিন্তু যখন আবেগ আসে তখন তো আমাকে বলতেই হবে যারা আমাদের এমন হেয় করে, যারা আমাদের সাথে ক্রীতদাসের মতো আচরণ করে, পা বেঁধে উপরে ঝুলিয়ে রাখবে, তখন তো আমরা বলবই ভাই, আমরা ইলিশ মাছ কেনো দিব?
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, পেয়াঁজ আমরা ভারত থেকে আমদানি করি। ভারতে যখন সংকট হয় তখন তো তারা পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। রপ্তানির উপর শুল্ক বৃদ্ধি করে দেয় তখন তো তারা ভাবে না যে, একটি বন্ধু রাষ্ট্রের ক্ষতি হতে পারে। আচ্ছা আমার দেশে দাম বেড়েছে, আমি যদি শুল্ক বৃদ্ধি করি তাহলে বন্ধ রাষ্ট্রের দাম বাড়বে। তারা তো এক ইঞ্চিও আমাদের ছাড় দেয় না। রিজভী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের আবেগ থাকতেই পারে কিন্তু আমাকে যখন হেয় করবে, আমাকে যখন অবহেলা করবে, আমাকে যখন ঘৃণা করবে এবং বাংলাদেশের মানুষের প্রতি যখন ধৃষ্টতাপূর্ণ কথাবার্তা বলবেন ভারতের একজন কেন্দ্রীয় ও প্রভাবশালী মন্ত্রী তখন আমার আবেগ আসবেই না, এরা তো আমাদের সাথে বন্ধুত্ব চায় না, জনগনের সাথে বন্ধুত্ব চায় না। এরা বন্ধুত্ব চায় শুধু শেখ হাসিনার মত একজন ভয়ংকর রক্তপিপাসু এক স্বৈরশাসকের সাথে।
এরা বাংলাদেশের জনগণকে পছন্দ করেনা, ওদের পছন্দ একটাই শেখ হাসিনা থাকলে বাংলাদেশে তারা মাতবরি করতে পারবে, শেখ হাসিনা থাকলে ভারতের আধিপত্য বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করবে। তখন আমাদের আবেগ তৈরি হবেই, ভারত যদি বাংলাদেশের মানুষকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে করে তখন তো আমাদের মধ্যে আবেগ চরম আকার ধারণ করবেই। বাংলাদেশের মানুষের আবেগ ছিল বলেই এখানে বারবার গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হয়েছি, বাংলাদেশের মানুষের আবেগ ছিল বলেই এক রক্তাক্ত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী পল্লী চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে বিগত আন্দোলনে গুম-খুন-নির্যাতিত হওয়া পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক শামীমুর রহমান শামিম, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামানসহ পল্লী চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।