ইরানের মিসাইল হামলার জবাবে ‘কয়েকদিনের মধ্যে’ হামলা চালাবে ইসরায়েল। এই হামলার পরিধি বড় হবে বলে জানিয়েছে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা।
একইসঙ্গে তিনি জানান, হামলায় ইরানের তেল উৎপাদন কেন্দ্র এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে লক্ষ্য করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এক্সিওসকে এসব তথ্য জানিয়ে ইসরায়েলের এই কর্মকর্তা বলেছেন, হামলা হবে ‘কয়েকদিনের মধ্যে’।
এর আগে মধ্যপ্রাচ্যে ‘আজ রাতেই’ শক্তিশালী হামলা চালানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগেরি। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, বিমানবাহিনী তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। রাতেই মধ্যপ্রাচ্যে শক্তিশালী হামলা চালাবে। গত বছর জুড়েই এ অঞ্চলে এমন হামলা চালানো হয়েছে।
তারও আগে মঙ্গলবার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে প্রায় ২০০টি মিসাইল ছোড়ে ইরান। হামাসের সাবেক প্রধান ইসমাইল হানিয়া, হিজবুল্লাহর সাবেক প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ এবং নিজেদের এক কমান্ডারকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালায় ইরান।
এ হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে নিরাপত্তা সংক্রান্ত নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ইসরায়েল সরকার।
সম্প্রতি লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলার মধ্যে ইরান ইসরায়েলে এ হামলা চালায়। সোমবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। পাশাপাশি ব্যাপক বিমান হামলা চালায়। হামলায় সোমবার এক দিনেই লেবাননে ৯৫ জন নিহত হয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েলের অপর এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে আরও জানায়, তাদের হামলার পর ইরান যদি ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে আবারও মিসাইল ছোড়ে তাহলে ‘ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে’ হামলা চালানোসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় রাখা হবে।
ইসরায়েলের হামলার জবাবে ইরান কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বিবেচনায় রাখছি ইরান সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে। তবে তখন এটি পুরোপুরি আলাদা বলের খেলা হবে।
উল্লেখ্য, ইরান মঙ্গলবারের মিসাইল হামলায় ইসরায়েলের একাধিক বিমান ঘাঁটিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। এরমধ্যে ইসরায়েলের নেভাতিম বিমান ঘাঁটি প্রায় অচল করে দিয়েছে তেহরান।
এ বিষয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, এই ঘাঁটিতে ইরানের কয়েক ডজন মিসাইল পড়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে তারা।
এছাড়া ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হেডঅফিস লক্ষ্য করেও মিসাইল ছুড়ে ইরান। তবে সরাসরি অফিসে মিসাইল না ছুড়ে পাশে সেগুলো ফেলে ইসরায়েলকে প্রতীকী বার্তা দিয়েছে ইরান। যে কোনো সময় মোসাদের হেড অফিসে হামলা করার সক্ষমতা যে রয়েছে তার জানান দিয়েছে ইরান।
ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরান বড় ভুল করেছে এবং এর জন্য দেশটিকে চড়া মূল্য দিতে হবে।
ইসরায়েলের হামলার হুঁশিয়ারির পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের অফিসিয়াল সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল যদি পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে ইসরায়েলের সব অবকাঠামোর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হবে।
প্রসঙ্গক্রমে ইরানের এ হামলার পর ইসরায়েলের সহযোগী দেশ বিশেষ করে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। তাছাড়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার ঘটনায় বৈঠকে বসেছে।