নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে আজকের দিনে একটি ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে। এই চুক্তির ফলে নেপাল প্রথমবারের মতো তৃতীয় কোনো দেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে পারবে।
চুক্তির মূল বিষয়বস্তু:
বিদ্যুৎ সরবরাহের সময়কাল: প্রতি বছর ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত নেপাল ভারতের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ রপ্তানি করবে।
প্রাথমিক রপ্তানির পরিমাণ: প্রথম ধাপে, নেপাল ভারতের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ রপ্তানি করবে।
বিদ্যুতের দাম: প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ দশমিক ৪ সেন্ট (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে সাত টাকা)।
রপ্তানির মাধ্যম: ভারতের ৪০০ কেভি ধলকেবার-মুজাফফরপুর আন্তঃসীমান্ত ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে নেপাল এ বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে এবং ভারত প্রচলিত লাইনের মাধ্যমে তা বাংলাদেশে পাঠাবে।
এই চুক্তির গুরুত্ব:
নেপালের জন্য: এই চুক্তির ফলে নেপালের জ্বালানি খাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। নেপাল এখন দেশের অভ্যন্তরে বিদ্যুৎ চাহিদা মিটিয়ে বাকি উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ রপ্তানি করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবে।
বাংলাদেশের জন্য: বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে এই চুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে যখন বিদ্যুৎ সংকট দেখা দেয়, তখন এই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির কারণ হবে।
আঞ্চলিক সহযোগিতা: এই চুক্তির মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষরকারীরা:
বাংলাদেশ: বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম
নেপাল: নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক কুলমান ঘিসিং
ভারত: ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার করপোরেশনের সিইও ডিনো নারান
এই ত্রিপক্ষীয় চুক্তি দক্ষিণ এশিয়ার বিদ্যুৎ খাতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এটি আঞ্চলিক সহযোগিতা ও উন্নয়নের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। আশা করা যায়, এই চুক্তির ফলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আরও বেশি পরিমাণ বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারবে এবং দেশের বিদ্যুৎ খাত আরও সুদৃঢ় হবে।