ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি তার বিরল জুমার খুতবায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিন ও লেবাননের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, ইসরায়েল ‘বেশি দিন টিকবে না।’
তেহরানের একটি মসজিদে হাজার হাজার মুসল্লিদের উদ্দেশে খুতবা দিতে গিয়ে খামেনি ইসরাইলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে ‘জনসেবা’ হিসেবে ন্যায্যতা দেন।
খামেনি তাঁর খুতবায় বলেন, ‘জায়নবাদী সত্তাকে মাটি থেকে উপড়ে ফেলা হবে, এর কোন শেকড় নেই, এটি ভুয়া, নড়বড়ে এবং শুধুমাত্র মার্কিন সমর্থনের কারণে টিকে আছে।’
ইরানের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী সর্বোচ্চ নেতা খামেনি পাঁচ বছর আগে সর্বশেষ জুমার খুতবা দেন। শীর্ষ বিপ্লবী গার্ড কমান্ডার কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার জবাবে ইরাকে মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইরানের নেতা সর্বশেষ জুমার নামাজের ইমামতি করেন। ইরান ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা লক্ষ্য করে ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার মাত্র তিন দিন পরে এবং ইসরাইল-গাজা যুদ্ধের প্রথম বার্ষিকীর তিন দিন আগে এবার তিনি প্রকাশ্যে জুমার খুতবা দিলেন।
পাশে রাইফেল রেখে ইরানের নেতা যখন ইসরাইল হামাস বা হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে বিজয়ী হবে না বলে ঘোষণা করেন তখনমসজিদের বিশাল মাঠে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি সমবেত কণ্ঠে ‘আমরা আছি তোমার সাথে’ স্লোগানে তার প্রতি সমর্থন জানন।
মঙ্গলবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরে ইসরাইলের প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষাপটে খামেনি ইসরাইলের শীর্ষ টার্গেট হওয়ার এবং তার জীবনের হুমকি থাকা সত্ত্বেও খামেনির প্রথম প্রকাশ্যে খুতবা এ নেতার অসম সাহসিকতার পরিচয় বহন করে।
খুতরায় তিনি গত সপ্তাহে বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ইরান-সমর্থিত লেবানিজ গ্রুপ হিজবুল্লাহর সাবেক প্রধান হাসান নসরুল্লাহরও প্রশংসা করেন।
খামেনি বলেন, ‘সৈয়্যদ হাসান নসরুল্লাহ আর আমাদের মধ্যে নেই, তবে তাঁর চেতনা এবং তাঁর পথ চিরকাল আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। তিনি ছিলেন জায়নদিবাদী শত্রুর বিরুদ্ধে উঁচুতে উড্ডীন পতাকা। তাঁর শাহাদাত এই প্রভাবকে আরো বাড়িয়ে দেবে। নাসরুল্লাহর শাহাদাত বৃথা যাবে না। আমাদের অটল ঈমান শক্তিশালী করে শত্রুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
খামেনি হিজবুল্লাহকে একটি ‘রহমতের গাছ’ বলে অভিহিত করেনে, যা নসরুল্লাহর নেতৃত্বে ক্রমাগত বেড়েছে।
তিনি ঘোষণা করেন, ‘লেবাননের রক্তাক্ত জনগণকে সাহায্য করা এবং লেবাননের জিহাদ এবং আল-আকসা মসজিদের লড়াইকে সমর্থন করা সকল মুসলমানের দায়িত্ব ও কর্তব্য।’
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ইসরাইলে হামাসের ৭ অক্টোবর হামলাকে ‘সঠিক পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, ‘কোনো আন্তর্জাতিক আইনে দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে নিজেদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য লেবানিজ এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আপত্তি ও প্রতিবাদ করার অধিকার নেই।’
খামেনি ইসরাইলকে ‘এই অঞ্চলের সমস্ত ভূমি ও সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ‘হাতিয়ার’ বলেও অভিহিত করেন।