পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। ওই অঞ্চলের দুটি নদীর পানি উপচে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাব্তি হয়েছে। এতে হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন।
রোববার নাইজেরিয়া রেডে ক্রসের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দেশটির কোজি রাজ্যের উদ্ধারকর্মীরা নাইজার ও বেনু নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে সেখানকার বাসিন্দাদের আশ্রয় শিবির অথবা আশপাশের গ্রামে যেতে সাহায্য করছেন।
কোজি রাজ্যের রেড ক্রসের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা উমর ওয়াই মাহমুদ বলেছেন, বন্যায় গত শুক্রবার অন্তত ৬০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর (দেড় লাখ একর) জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, নাইজার নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানকার পরিস্থিতি বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কোজি রাজ্যের তথ্য কমিশনার কিংসলে ফেমি ফানও বলেছেন, আশ্রয় শিবিরগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। বন্যা কবলিত অঞ্চলে ১০ লাখের বেশি মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাজ্যের রাজধানী লোকোজার কিছু অংশসহ ঘনবসতিপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় গত এক মাস ধরে বন্যার প্রকোপ বাড়ছে। ইবাজি জেলার তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি জমি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কিংসলে ফেমি ফানও।
নাইজেরিয়ায় মে থেকে নভেম্বর মাসে বর্ষা মৌসুমে প্রায়ই বন্যা দেখা দেয়। তবে এই বছর দেশটিতে বন্যা পরিস্থিতি ২০২২ সালের বন্যার চেয়ে ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ২০২২ সালে দেশটিতে বন্যায় পাঁচ শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এবারের বন্যায় এখন পর্যন্ত প্রাণহানির কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
গত সেপ্টেম্বরে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বোর্নোর রাজধানী মাইদুগুরিতে বন্যায় অন্তত ৩৭ জন নিহত হন। স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা ও বাসিন্দারা প্রায়ই বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি দুর্বল পরিকল্পনা, নদীর কিনার ঘেঁষে স্থাপনা নির্মাণ এবং বাঁধ থেকে পানি ছাড়াকে দায়ী করেন।