ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে আবারও একটি স্কুলে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বর্বর এই হামলায় কমপক্ষে ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দেড় শতাধিক মানুষ।
ইসরায়েল গাজার জাবালিয়ার একটি স্কুলে হামলা চালালে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার স্কুলটিতে ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছিল। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর গাজা উপত্যকায় আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হওয়া আরেকটি স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ অন্তত ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনী ওই এলাকায় তাদের স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মেধাত আব্বাস জানিয়েছেন, ইসরায়েলের নতুন করে স্থল আক্রমণের পর প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ থাকা এই এলাকায় বৃহস্পতিবারের হামলায় আরও ১৬০ জন আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, “আগুন নেভানোর পানি নেই। কিছুই নেই। এটা একটা গণহত্যা। বেসামরিক নাগরিক ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে, আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।”
অবশ্য যথেষ্ট প্রমাণ ছাড়াই ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, হামাস এবং ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ গ্রুপের যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে হামলাটি করা হয়েছে। তাদের দাবি, যোদ্ধারা জাবালিয়ার আবু হুসেন স্কুলের মধ্যে থেকে কাজ করছিল। মূলত এই স্কুলটি বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে কাজ করছে।
তবে ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) পরিচালিত স্কুলকে যুদ্ধের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে হামাস। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, এই ধরনের অভিযোগগুলো “মিথ্যা ছাড়া কিছুই নয়”।
এর আগে বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেন, গাজা শহরে দুটি পৃথক ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এবং মধ্য ও দক্ষিণ গাজা এলাকায় আরও কয়েকজন নিহত হয়েছেন।
আবু হুসেন স্কুলে হামলার পর ফিলিস্তিনি মিডিয়ায় প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, হামলার জেরে আগুন ধরে যাওয়ার পর তাঁবু থেকে ধোঁয়া বের হয়ে আসছে। এছাড়া শিশুসহ হতাহতদেরকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছে অনেক বাস্তুচ্যুত মানুষ।
জাবালিয়ার বাসিন্দারা বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী আকাশ থেকে, ট্যাংক থেকে গোলাবর্ষণ করে এবং ভবনগুলোতে বোমা রেখে ও দূর থেকে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এই হামলা চালায় এবং ঘর উড়িয়ে দেয়।
গত দুই সপ্তাহ ধরে এই এলাকাটিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর জোরালো অভিযান চলছে। জাতিসংঘ অনুমান করছে, প্রায় চার লাখ মানুষ উত্তর গাজায় আটকা পড়েছেন এবং তীব্র বোমাবর্ষণ, ইসরায়েলি স্নাইপার ও স্থল হামলায় যুক্ত থাকা সেনাদের কারণে তারা বের হতে পারছেন না।