স্পেনের পূর্বাঞ্চলীয় ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে বিক্ষুব্ধ জনতার তোপের মুখে পড়েছেন দেশটির রাজা ও প্রধানমন্ত্রী। গত কয়েক দিনের বন্যায় দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানির পর রোববার ভ্যালেন্সিয়া পরিদর্শনে গিয়ে ওই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন তারা। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল থেকে বলেছেন, ক্ষুব্ধ জনতার ছোড়া কাদা স্পেনের রাজা এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখে লেগেছে।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ, রানি লেটিজিয়া ও প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের একটি দল রোববার বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পাইপোর্তা শহর পরিদর্শন করেছেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা রাজা ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। বন্যায় প্রাণহানি ঠেকাতে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় তারা সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে উত্তেজিত জনতার অনেকেই রাজা ও প্রধানমন্ত্রীর মুখে কাদা ছুড়ে মারেন।
তবে উত্তেজিত জনতার বেশিরভাগই প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ও ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলের প্রধান কার্লোস ম্যাজনের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। এ সময় তাদের ‘‘ম্যাজনের পদত্যাগ চাই’’, ‘‘আর কত মৃত্যু’’, ‘‘দূর হও’’-সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী সানচেজ বলেছেন, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিধ্বস্ত পূর্ব ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলে উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য আরও ১০ সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়া স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ২১১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া এই বন্যায় আরও নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক ডজন মানুষ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই দেশটিতে চলমান বন্যা-বিপর্যয়ে অনেক বাড়িঘর-রাস্তাঘাট কাদায় ডুবে গেছে এবং শত শত অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ লোকজনের জীবিত উদ্ধারের আসা ক্ষীণ হয়ে আসছে বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বন্যায় ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলেেই প্রায় সব মৃত্যুর রেকর্ড করা হয়েছে। ওই অঞ্চলে হাজার হাজার নিরাপত্তা ও জরুরি পরিষেবা কর্মী মরদেহের খোঁজে ধ্বংসাবশেষ এবং কাদা পরিষ্কার করছেন।
টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে সানচেজ বলেছেন, চলতি শতাব্দীতে ইউরোপে দ্বিতীয় প্রাণঘাতী বন্যার মুখোমুখি হয়েছে স্পেন। উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
দেশের সরকার ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলের প্রধানের আরও ৫ হাজার সৈন্য মোতায়েনের অনুরোধে সাড়া দিয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত ৫ হাজার পুলিশ কর্মকর্তা ও সিভিল গার্ড মোতায়েন করার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী সানচেজ।