গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। সোমবার সৌদির রাজধানী রিয়াদে আরব ও মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর শীর্ষ এক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আরব লীগ ও অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) শীর্ষ সম্মেলনের আগে দেওয়া ভাষণে ‘‘ফিলিস্তিনি এবং লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার’’ নিন্দা জানিয়েছেন সৌদি যুবরাজ।
ইসরায়েলকে ‘‘আর কোনও আগ্রাসন না চালাতে’’ এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। আরব দেশগুলোর জোট আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল ঘেইতও গাজা এবং লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কোনও কথার মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশা প্রকাশ করা যায় না।
‘‘ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের নেওয়া সব পদক্ষেপ দীর্ঘস্থায়ী শান্তি অর্জনের প্রচেষ্টায় বাধা তৈরি করছে। ন্যায়বিচারের মাধ্যমে আমরা স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’’ আরব লীগের এই মহাসচিব বলেছেন, ইসরায়েলের চালানো সহিংসতায় বিশ্ব চোখ বন্ধ করে রাখতে পারে না।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) বলেছে, গাজা এবং লেবাননে ইসরায়েলের আগ্রাসন আরব ও ইসলামিক বিশ্বের নেতাদের জরুরি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।
‘‘সম্মেলনের মূল অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে এই অঞ্চলে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ, বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা, ফিলিস্তিনি ও লেবাননের জনগণকে সহায়তা, চলমান হামলা বন্ধ এবং স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর চাপ প্রয়োগ করা।’’
সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল আল-আখবারিয়ায় প্রচারিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আরব লীগ ও ওআইসির যৌথ সম্মেলনে অংশ নিতে রোববার সন্ধ্যায় রিয়াদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু ও লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি। এছাড়া ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফও এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। ওই হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ২০০ জনের বেশি নিহত হন। পরে সেদিনই গাজায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। তখন থেকে ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনে ৪৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।
লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকেও লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটিতে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে শুরু করা ইসরায়েলের যুদ্ধে গত এক বছরে ৩ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।