বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আয়োজনে ‘ফ্রেশার রিসিপশন অ্যান্ড ক্যারিয়ার গাইডলাইন’ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেইট সংলগ্ন এ জে কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত প্রোগ্রাম দুপুর ১টার দিকে শেষ হয়। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত এই প্রোগ্রামে প্রায় সহস্রাধিক নবীন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
শনিবার প্রচার সম্পাদক সাঈদ বিন হাবিব স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। বার্তায় বলা হয়, শাখার শিক্ষা সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইব্রাহিমের উদ্বোধনী বক্তব্যে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি নাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম।
এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্লানিং ও ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ডা. ওসামা রাইয়ান। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মো. বরকত আলী। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হাসমত আলী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা কাউকে কখনো জোর করে ছাত্রশিবির করতে বলি না। আমরা সৎ, দক্ষ এবং দেশপ্রেমিক নাগরিক হতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আমাদের শিখিয়ে গেছে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে হবে, সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করতে হবে, দেশের স্বার্বভৌমত্ব কে রক্ষা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির এই ধরনের প্রেরণা নিয়ে কাজ করে এবং শিক্ষার্থীদের তাদের সহযোগী হওয়ার আহ্বান করে। কোনো শিক্ষার্থী যদি মনে করে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সংযুক্ত না হয়েও সে এই নৈতিক কাজগুলো করতে পারবে, আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাই। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্ররাজনীতিকে দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে হল দখল, র্যাগিং কালচার, সিনিয়র-জুনিয়র ডমিনেন্সকে বিন্দুমাত্র সমর্থন করি না।
এ ছাড়া তিনি বলেন, গত ১৬ বছর শিবিরকে উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমাদের নামে দিয়েছে অজস্র অপবাদ। তাই অনেকে আমাদের গালি দেয়। আমরা কারো গালিকে বাধা দিব না। স্বাধীন দেশে কারও কোনো কাজে বাধা দেওয়া উচিত না। তবে আমরা অনুরোধ করছি, আমাদের কাজেও আপনারা বাধা দিবেন না। আমাদের আদর্শিক চর্চা করতে দিন, তাহলে দ্রুতই বুঝতে পারবেন আমাদের বিরুদ্ধে সমালোচনাগুলো কতটা সত্য এবং কতটা অপবাদ।
চবির ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. বরকত আলী বলেন, আমরা মানুষ হলেও আমাদের মধ্যে পশুত্বের ভাব রয়েছে। এই পশুত্ব দূর করতে আল্লাহ তায়ালা একটা মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাযিল করেছেন। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের ৫টি বিষয় খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। এগুলো হলো, চরিত্র, সৃজনশীলতা, যোগাযোগ, সক্ষমতা ও সাহস।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্লানিং ও ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ডা. ওসামা রাইয়ান বলেন, আমরা জানি সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। তাই বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক হতে হবে। বন্ধুর কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। বন্ধুকে জ্ঞানী, বিচক্ষণ ও নৈতিক হতে হবে।
নাহিদুল ইসলাম বলেন, যাদের আত্মত্যাগে আমরা বিপ্লবের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, আজ তাদের স্মরণ করছি। এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা আমরা বজায় রাখব। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে আগেও সচেতন ছিলাম। শিক্ষার্থীবান্ধব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার লক্ষ্যে আমরা প্রশাসন কে ২৪ দফা দাবি জানিয়েছিলাম। আপনাদের কে সঙ্গে নিয়ে আমরা এই দাবিগুলোর বাস্তবায়ন করব। আগামীর ক্যাম্পাস হবে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত।
সহস্রাধিক নবীনদের অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত আয়োজনে অনুষ্ঠানটি সুশৃঙ্খলভাবে সমাপ্ত হয় বলে বার্তায় বলা হয়।