গণতান্ত্রিক বিশ্বে পার্লামেন্টে হয়তোবা এটা প্রতিবাদের অভিনব ভাষা। নতুন উত্থাপিত বিল পছন্দ না হওয়ায় তা দুই হাতে ছিঁড়ে কুটি কুটি করে ফেললেন এক তরুণী এমপি। এরপর সিট থেকে উঠে সরকার দলীয় এমপি ও স্পিকারের সামনের ফাঁকা লনে উচ্চস্বরে গান গাইতে গাইতে নাচতে লাগলেন তিনি।
তার এই বিশেষ প্রতিবাদে সাড়া দেন আরও অনেক সমমনা সহকর্মী। তারাও ওই তরুণীর কণ্ঠে সুর মেলান আর হাত-পা তুলে যে যার অবস্থান থেকে নাচতে থাকেন।
মূলত প্রাচীন মাওরি আদিবাসীর ‘অধিকার’ সংক্রান্ত বিতর্কিত বিল নিয়েই এমন হইহট্টগোল নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে। তীব্র বিতর্ক, ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং হাঁকডাক চলে সংসদজুড়ে। কনিষ্ঠতম এমপি হানা-রাউহিতি কারিরিকি মাইপি-ক্লার্ক শুরু করেন এমন প্রতিবাদী নাচ।
এর আগে পার্লামেন্টে পেশ করা হয় ট্রিটি প্রিন্সিপালস বিলের খসড়া। ১৮৪০ সালে স্বাক্ষরিত ওয়াইটাঙ্গি চুক্তির ভিত্তিতেই তৈরি করা হয়েছে এই বিল। কিন্তু তা মানতে নারাজ বিরোধীরা। তাদের দাবি, এই বিলে নিউজিল্যান্ডের প্রাচীন জনগোষ্ঠী মাওরিদের অধিকার খর্ব করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ছড়ানো হচ্ছে জাতিবিদ্বেষ। বিলের খসড়া পাঠের পরই আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ শুরু করেন মাওরি এমপিরা।
২২ বছর বয়সী প্রতিবাদী তরুণী পাতি মাওরি দলের সদস্য। তার দাবি, দেশের সবচেয়ে প্রাচীন আদিবাসীদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে নতুন বিল! একারণে মাওরিদের ঐতিহ্যবাহী হাঁকা নাচ শুরু করেন তিনি ও তার সহকর্মীরা।
পার্লামেন্টের মধ্যে তাদের এই কাণ্ডের ভিডিও ভাইরাল হয় নেটদুনিয়ায়। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে ওই বিলের ওপর ভোটাভুটি স্থগিত করা হয়। একই সাথে হাঁকা নাচ দেওয়ার জন্য দুই এমপিকে অধিবেশন থেকে বের করে দেন স্পিকার।
সরকারি জোটের অন্তর্ভুক্ত একটি ক্ষুদ্রতম দল ওই বিলটি পার্লামেন্টে উত্থাপন করলেও প্রধান দুই দলের কেউই তা সমর্থন করে না বলে জানিয়েছে। ফলে বিলটির ভবিষ্যৎ অন্ধকার বলে মনে করেন এমপিরা।