২০২৫ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে চলমান বিতর্ক ক্রমশ নতুন মাত্রা পাচ্ছে। টুর্নামেন্টের সূচি ও ফিক্সচার ঘোষণার চুক্তিভিত্তিক সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় আর্থিক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আইসিসি এই সূচি কমপক্ষে ৯০ দিন আগে প্রকাশ করার কথা ছিল, যা এখনো করা হয়নি।
এই বিলম্বের কারণে আইসিসির প্রধান বিনিয়োগকারী এবং সম্প্রচার অংশীদার ডিজনি স্টার (বা মিশ্রিত জিও স্টার) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টুর্নামেন্ট থেকে বাণিজ্যিক সুবিধা আদায়ে এই বিলম্ব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও আইসিসি এই বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, তবুও বোঝা যাচ্ছে যে সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে এবং আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়ছে এমনটাই জানিয়েছে ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) যারা এই টুর্নামেন্টের আয়োজক, এই বিলম্বের কারণে গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। সূত্র অনুযায়ী, পিসিবির একজন সিনিয়র কর্মকর্তা আইসিসি সিইও জিওফ অ্যালারডিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের অবস্থান জানিয়েছেন। এই অসন্তোষ বিশেষভাবে বেড়েছে, যখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) জানায় যে ভারত দল পাকিস্তানে খেলতে যাবে না।
এদিকে, পিসিবি এবং আইসিসির মধ্যে চলমান আলোচনায় ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে বিতর্ক তীব্রতর হয়েছে। পিসিবি পাকিস্তানের ম্যাচগুলো নিজ দেশে খেলতে চায়, কিন্তু ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের জন্য হাইব্রিড মডেলে অন্য দেশে ম্যাচ আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে আইসিসি।
৫০ ওভারের ফরম্যাটের ক্রমহ্রাসমান জনপ্রিয়তার মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গুরুত্ব বাড়াতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই ফরম্যাটে দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখতে এমন ম্যাচ টুর্নামেন্টের সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, টুর্নামেন্টের আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে অনেকেই মনে করছেন, ২০ ওভারের ফরম্যাটে এই ইভেন্টটি আরও উপযোগী ও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হতে পারত।
এই সংকট থেকে তিনটি সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত আসতে পারে:
১. হাইব্রিড মডেল গ্রহণ করে পিসিবি অনিচ্ছাসত্ত্বেও এতে অংশ নেবে।
২. পিসিবি হাইব্রিড মডেল প্রত্যাখ্যান করে টুর্নামেন্ট বয়কট করে এবং টুর্নামেন্ট অন্য কোনো দেশে স্থানান্তরিত হয়।
৩. টুর্নামেন্ট বাতিল বা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয় (যদিও এটি কম সম্ভাবনাময়)।
টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের অনুপস্থিতি কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে, তবে ভারতের অনুপস্থিতি টুর্নামেন্টের মূল্য কার্যত শূন্যে নামিয়ে আনবে। এটি বাণিজ্যিকভাবে অচলাবস্থার সৃষ্টি করবে।
এমনকি যদি পিসিবি টুর্নামেন্ট বয়কট করে, তবে এর প্রভাব তাদের পরবর্তী অংশগ্রহণে পড়তে পারে, বিশেষত ভারতের আয়োজনে থাকা পাঁচটি বড় টুর্নামেন্টে।
আইসিসির জন্য এটি এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নয়, সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের বাণিজ্যিক স্বার্থও নির্ধারণ করবে।